Site icon Jamuna Television

ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ ১০ ব্যাংক, শীর্ষ ৩ গ্রাহক খেলাপি হলে এই সংখ্যা হবে ২৫

আলমগীর হোসেন:

ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ১০টি ব্যাংক। খেলাপি ঋণ ৩ শতাংশ বাড়লে এবং শীর্ষ ৩ গ্রাহক খেলাপি হলে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে অন্তত ২৫টিতে। অথচ, আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং নিয়মে ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করার কথা প্রতিটি ব্যাংকের। কিন্তু তা মানেনি অনেক ব্যাংক।

এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি উদ্বিগ্ন ব্যাংকাররাও। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে, ব্যাংকিং খাতের দুর্দশার চিত্র।

ব্যাংকাররা বলছেন, ঋণ বিতরণে নীতিমালার অনুসরণ না করা এবং তদারকি দুর্বলতায় এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবেশি যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে মূলধন পর্যাপ্ততার হার সবচেয়ে কম। এজন্য খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিই মূল কারণ বলেও মনে করেন তারা।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, মূলধন ঘাটতি- অবশ্যই এটি বড় সতর্কবার্তা। ন্যূনতম মূলধন সংরক্ষণের ব্যর্থতায় যদি নতুন করে কোনো ব্যাংকের নাম যোগ হয়, তাহলে এই খাতে সেটি আরও বেশি প্রভাব ফেলবে। এর দায় আমাদের সবার, আমরা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমেছিলাম।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, অফিশিয়াল যে তথ্য-চিত্র দেখানো হচ্ছে, এরচেয়েও খারাপ অবস্থা এখন। সার্বিক অবস্থা খুবই খারাপ, ব্যাংকিং খাতের অবস্থা বেশ দুর্বল।

ঋণ কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ায় ব্যাংকিং খাতে ঝুঁকির মাত্রা বেড়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০-২৫টা ব্যাংকে যদি মূলধন ঘাটতি দেখা দেয়, তাহলে সেটা শুধু সেসব ব্যাংকে নয়, পুরো ব্যাংকিং খাতে প্রভাব পড়বে। দেশের অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে তো নীতিমালা আছে। এগুলো মানা হয়নি। তা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঠিকমতো তদারকি করা হয়নি। দেশের আর্থিক ব্যবস্থা তো ব্যাংক নির্ভর। ব্যাংকগুলোর যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে আর্থিক খাতটা কই গিয়ে দাঁড়াবে?

বাংলাদেশ বলছে, আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদনের মধ্যমে সতর্ক করা হয় ব্যাংকগুলোকে। অর্থনীতি সংকট দেখা দিলে ব্যাংকিং খাতে তার প্রভাব কতটা পড়তে তা-ও তুলে ধরা হয় এ প্রতিবেদনে। সংকট থেকে উত্তরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগের কথা জানালেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

তিনি বলেন, অনেক ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। অবজারভার দেয়া হয়েছে। গাইডলাইন্স দিই, নতুন করে ঝূঁকিপূর্ণ ঋণ না দেয়ার। আর যে সম্পদ সৃষ্টি করা হবে তা যেন কম ঝূঁকিপূর্ণ হয়, সেভাবেই ক্যাপিটাল পরিকল্পনাগুলো করার। যাতে ব্যাংকগুলো ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে পারে।

/এমএন

Exit mobile version