Site icon Jamuna Television

মশা কমলেও এই আবহাওয়ায় কমছে না ডেঙ্গুর প্রকোপ

আখলাকুস সাফা:

মশা কমলেও আবহাওয়ার কারণে ডেঙ্গুর প্রকোপ সহজেই কমছে না বলে জানিয়েছেন কীটতত্ত্ববিদরা। জ্বরের ৪ থেকে ৫ দিন সময়টা ডেঙ্গু রোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি ভয়ের। জ্বর থাকুক বা না থাকুক, এসময় শরীরে বড় ক্ষতি করে ফেলে ডেঙ্গুর ডেন-টু সেরো-টাইপ ভাইরাস। শক সিনড্রোমে মারা যাওয়াদের বেশির ভাগের ক্ষেত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

চলতি বছরের জুলাই থেকেই শুরু হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এখনও ডেঙ্গু রোগীতে ঠাসা হাসপাতালগুলো। বেশিরভাগ রোগী জ্বরের ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ্য হচ্ছেন ৯২ ভাগ রোগী। ঢাকায় মৃতের হার দশমিক ৭।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বেশির ভাগেরই মৃত্যু হচ্ছে শক সিনড্রোম থেকে মাল্টিপল অর্গান ডেমেজের কারণে। তাদের অধিকাংশের অবস্থা খারাপ হয়ে যায় জ্বরের ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে।

বলা হচ্ছে, এটাই ডেঙ্গুর ডেন টু সেরোটাইপের বৈশিষ্ঠ্য। জ্বর সেরে গেলেও শরীরে ভাইরাস সক্রিয়ই থেকে যাচ্ছে। এবার বেশিরভাগ আক্রান্ত এই সেরোটাইপে।

এ নিয়ে জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. শেখ মঈনুল খোকন বলেন, জ্বরের কিছুদিনের মধ্যে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার পর রোগীরা ভাবে ডেঙ্গু নিরাময় হয়েছে। কিন্তু শরীরের কোনো অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ওই সময় থেকেই। সঠিক চিকিৎসা না নিলে জ্বরের ৪-৫ দিনের মধ্যে প্ল্যাটিলেট আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, আর তখনই প্রাণহানি ও আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।

চিকিৎসক ও গবেষকদের পরামর্শ, জ্বরের অন্তত ৭ দিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। ৭ দিন পর্যন্ত চিকিৎসকের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকা উচিত বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশ্লেষক ডা. শেখ মঈনুল খোকন।

এদিকে, ডেঙ্গুর প্রকোপ খুব শিগগিরই কমার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এর কারণ, জুলাইয়ে সরকারের মশা নিধন কার্যক্রম কিছুটা দেখা গেলেও তার ফলের খাতা কার্যত শূন্য। এখনও দৈনিক গড় আক্রান্তের সংখ্যা দুই থেকে আড়াই হাজার।

এ নিয়ে কীটত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. আবু ফয়েজ মো. আসলাম বলেন, তাপমাত্রা কমে গেলে মশার জীবন চক্র কমে আসলেও বংশবৃদ্ধির হার বেড়ে যায় অল্প সময়েই। এক মাসে আগের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ লার্ভা তৈরি হবে। এজন্য তাপমাত্রা বাড়া-কমার বিষয়টি মাথায় রেখে মশক নিধন কার্যক্রম নিয়ে পুনরায় ভাবতে হবে।

কীটত্ত্ববিদদরা জানান, জলবায়ু পাল্টে এখন সময়-অসময়ে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তাই বছরজুড়ে এডিসের দমন চালিয়ে যেতে হবে।

এসজেড/

Exit mobile version