Site icon Jamuna Television

বিপৎসীমার ওপরে তিস্তার পানি, সংকট শুকনো খাবারের

রংপুর ব্যুরো:

উজানের ঢল আর বৃষ্টিতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে উত্তরের প্রায় সব নদ-নদী। এরইমধ্যে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমারের পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে উত্তরের নদ-নদীবেষ্টিত চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো। পানিবন্দি হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন অন্তত ৫০ হাজার পরিবার। সংকট দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারের।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা আনুমানিক ৬টায় তিস্তার পানি লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সে.মি. এবং কাউনিয়ায় ১০ সে.মি. ওপর দিতে প্রবাহিত হচ্ছিলো। দেশে ও উজানে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতজনিত কারণে উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, আপার করতোয়া, আপার আত্রাই, কুলিখ, টাঙ্গন, পুনর্ভবা নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া এবং কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার আরও ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ প্রকৌশলী মুস্তাফিজার রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পঞ্চগড়ে ৯০, কুড়িগ্রাম ৬০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।

এদিকে, পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়ার নোহালী, কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, লক্ষিটারী, মর্নেয়া এবং গজঘন্টা ইউনিয়ন, কাউনিয়ার বালাপাড়া, টেপামধুপুর, পীরগাছার তাম্বুলপুর, ছাওলা ইউনিয়নের তিস্তা বেষ্টিত চরাঞ্চল এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কোথাও কোথাও কোমর পরিমাণ পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর। সদ্য রোপন করা আমন ধান তলিয়ে গেছে। উপচে গেছে পুকুর। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২০ হাজার মানুষ। এসব বন্যা কবলিত মানুষের জন্য শুকনা খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

বন্যা পরিস্থিত প্রসঙ্গে রংপুরের ডিসি মোবাশ্বের হাসান জানিয়েছেন জানিয়েছেন, তিস্তায় আবারও ফ্ল্যাস ফ্ল্যাট হয়েছে। প্রয়োজনীয় সবকিছুই মজুদ আছে।

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম, কালিগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তিস্তাপাড়ের নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা বেস্টিত চরাঞ্চল ও নিম্মাঞ্চলগুলো। এসব এলাকার অন্তত ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তলিয়ে গেছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, সার্বক্ষণিকভাবে জলমগ্ন ও ভাঙ্গন আক্রান্ত এলাকাসমূহ তদারকি করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে সতর্ক রাখা হয়েছে। যখন যা প্রয়োজন হবে, তখন তা পৌঁছে দেয়া হবে। আবহাওয়া অনুযায়ী চরাঞ্চল ও নিম্মাঞ্চলগুলোর মানুষকে উঁচু স্থান এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।

/এসএইচ

Exit mobile version