Site icon Jamuna Television

ইউটিউব দেখে বাড়িতে সন্তান প্রসবের চেষ্টা স্বামীর, স্ত্রীর মৃত্যু

স্ত্রী বিছানায় কাতরাচ্ছেন প্রসব বেদনায়। কিন্তু তাকে হাসপাতালে না নিয়ে ইউটিউব দেখে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করলেন স্বামী। ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হলো স্ত্রীর। খবর ফ্রিপ্রেস জার্নালের।

এমনই ঘটনা ঘটেছে ভারতের তামিলনাড়ুর তিরুপুর শহরে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী কার্তিকেয়নকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরেই স্ত্রী কৃতিগার (২৮) মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিরুপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে বুপাথি। ওই দম্পতির পরিচিত এক দম্পতিকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে সুস্থ আছে নবজাতক।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে কৃতিগার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। ওই অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে না গিয়ে বাড়িতেই প্রসব করান কৃতিগার স্বামী। কীভাবে সন্তান প্রসব করাতে হয়, সে সব আগে থেকেই ইউটিউবে ভিডিও দেখে এবং ইন্টারনেটে পড়াশোনা করে রপ্ত করেছিলেন কার্তিকেয়ন। সেভাবেই সন্তান প্রসবও করান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সংজ্ঞা হারান কৃতিগা। তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মা ও সদ্যোজাতকে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। চিকিৎসকরা জানান, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে কৃতিগার।

কিন্তু কেন এমন করলেন কার্তিকেয়ন-কৃতিগা? জানা গিয়েছে, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি কার্তিকেয়ন-কৃতিগাও স্বাভাবিক প্রসবে বিশ্বাস করতেন। তাদের তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তারও জন্ম হয়েছে বাড়িতেই। কৃতিগার দ্বিতীয় সন্তান গর্ভে আসার কিছুদিন আগেই মারা যান কার্তিকেয়নের মা থাঙ্গাভেলু। দম্পতির পাশাপাশি পরিবারেরও বিশ্বাস ছিল, কৃতিগার গর্ভে নবজন্ম হবে থাঙ্গাভেলুর। পাশাপাশি তারা সবাই স্বাভাবিক ও বাড়িতে প্রসবে বিশ্বাসী ছিলেন।

ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে কার্তিকেয়নকে। তদন্তকারী অফিসার জয়চন্দ্রন জানিয়েছেন, পরিবারের সবাই কৃতিগাকে বাড়িতে এবং স্বাভাবিক প্রসবের জন্য উৎসাহ দিতেন। কার্তিকেয়নদের পরিচিত স্থানীয় দম্পতি প্রভীন কুমার এবং লাবণ্যও এলাকাবাসীকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের বিরোধিতায় প্রচার চালাত এবং বাড়িতে প্রসবে প্ররোচনা দিত। ওই দম্পতিকেও আটক করা হয়েছে। সেই সব কারণে গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে একবারও কোনো চিকিৎসকের কাছে চেক-আপ পর্যন্ত করাননি ওই দম্পতি।

এটিএম/

Exit mobile version