Site icon Jamuna Television

শ্রীলঙ্কার কাছে ২১ রানে হারলো বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

এশিয়া কাপের সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ২১ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে সাদিরা সামারাবিক্রমার ৯৩ রানের ওপর ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা। ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৩৬ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। টাইগারদের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে তাওহিদ হৃদয় ৮২ রান করেন। এই হারে ফাইনাল খেলার আশা প্রায়ই শেষ সাকিব আল হাসানের দলের।

কলম্বোর প্রেমাদাসা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৫৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই টাইগার ওপেনার। প্রথম ওভারে তেমন রান না আসলেও দ্বিতীয় ওভারে দু’টি বাউন্ডারি হাঁকান মিরাজ। এরপর থেকেই দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন দুই ওপেনার। যদিও নাঈম ঠিক ভালোভাবে টাইমিং করতে পারছিলেন না। তবে উইকেটের অপরপ্রান্তে দেখেশুনে খেলার পাশাপাশি রানও করছিলেন মিরাজ। পাওয়ারপ্লে’তে এই দুই ওপেনার কোনো বিপদ হতে দেননি।

১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে জুটির হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। তবে এরপর বেশিক্ষণ তাকে টিকতে দেননি দাসুন শানাকা। লঙ্কান অধিনায়কের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে তা সোজা চলে যায় মিড উইকেটে ফিল্ডিং করা দুশান্থ হেমান্থের হাতে। ফলে দলীয় ৫৫ রানে প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। ৪টি চারের সাহায্যে ২৯ বলে ২৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন মিরাজ।

১৪তম ওভারে লঙ্কানদের ফের উইকেট এনে দেন শানাকা। লঙ্কান অধিনায়কের বাউন্সার পুল খেলতে গিয়ে বল টপ এজ হয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়েন ধুঁকতে থাকা নাইম। ৪৬ বলে ২১ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার। ক্রিজে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। মাথিশা পাথিরানার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল লেট কাট করতে গিয়ে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে উইকেট রক্ষক কুশল মেন্ডিসের হাতে ধরা পড়েন। যদিও প্রথমে আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। তবে শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে থার্ড আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত দেন। মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন সাকিব।

ক্রিজে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাস। বাঁহাতি লঙ্কান স্পিনার দুনিথ ওয়েললাগের টার্ন করা বলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন লিটন। আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে ১৫ রান করেন তিনি।

এরপর মুশফিকুর রহিম ও তাওহিদ হৃদয় মিলে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন। দুজন মিলে ৭২ রানের জুটি গড়েন। তবে দলীয় ১৫৫ রানে ৪৮ বলে ২৯ রান করে আউট হয়। এরপর আর তেমন কিছু ঘটেনি বাংলাদেশের ইনিংসে। হৃদয় একাই চেষ্টা করে গেছেন একপাশে। শামীম হোসেন এসে একা রেখে চলে গেছেন হৃদয়কে। হৃদয় নিজেও মাহিশ থিকশানার বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে ফিরলে বাংলাদেশের সমস্ত আশা গুড়িয়ে যায়। হৃদয় ৯৭ বলে ৮২ রান করেন। দলীয় সংগ্রহ তখন ৮ উইকেট হারিয়ে ২০১ রান।

পরবর্তীতে নাসুম আহমেদের ব্যাটে ১৫ রান এবং হাসান মাহমুদের ব্যাটে ১০ রান, দলকে কিছুটা আশা দেখায়। সে আশা অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয় না। ১২ বলে যখন ২২ রান প্রয়োজন, পাথিরানার নতুন ওভারের প্রথম বলেই নাসুন বোল্ড হয়ে ফেরেন। ফলে ২৩৬ রানেই সব উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ ।

শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন দাসুন শানাকা, মাহিশ থিকসানা ও মাথিশা পাথিরানা।

এর আগে, টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে শ্রীলঙ্কা। এক উইকেটে ১০৮ রান করা দলটি এরপর মাত্র ৫৬ রানের ব্যবধানে হারায় ৪ উইকেট।

একটা পর্যায়ে ৫ উইকেটে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ১৬৪ রান। ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে সঙ্গে নিয়ে ৫৭ বলে ৬০ রানের জুটি গড়েন সাদিরা সামারাবিক্রমা। এরপর ফের ব্যাটিং বিপর্যয়। শেষ দিকে শ্রীলঙ্কা ৩৩ রানে হারায় ৫ উইকেট।

দলের এই ব্যাটিং বিপর্যয়ে লড়াই করে গেছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান সামারাবিক্রমা। 

শেষ ওভারে শতরানের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে সামারাবিক্রমার প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। শেষ ওভারে বল খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৪টি। তাসকিন আহমেদের করা তৃতীয় বলে চার আর চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৭১ বলে ৯৩ রানে পৌঁছে যান তিনি।

শেষ দুই বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে সামারাবিক্রমার প্রয়োজন ছিল ৭ রান। পঞ্চম বলটি ডট আর শেষ বলে আউট হলে তার সেঞ্চুরির স্বপ্ন ভেস্তে যায়।

সেঞ্চুরি না পেলেও দলকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর উপহার দিতে তার ৭২ বলে ৮টি চার আর ২টি ছক্কার সাহায্যে ৯৩ রানের ঝড়ো ইনিংসটি বড় ভূমিকা রাখে। এছাড়া ৬০ বলে ৪০ রান করেন পাথুম নিশানকা।

বাংলাদেশ দলের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। ২ উইকেট নেন আরেক পেসার শরিফুল ইসলাম। 

/আরআইএম

Exit mobile version