Site icon Jamuna Television

একসময়ের শোষণের নীলচাষেই এখন সমৃদ্ধি বাড়ছে কৃষকদের

একসময়ের শোষণের নীলচাষে এখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির স্বপ্ন বুনছেন উত্তরের কৃষকরা। ব্রিটিশবেনিয়াদের বিদায়ের পর পারিবারিক জ্বালানির চাহিদা মেটাতে মাল গাছ হিসেবে এই নীল গাছ লাগানো হতো রাস্তার পাশে। তবে এখন বাণিজ্যিকভাবে সরাসরি জমিতে চাষ হচ্ছে। কম খরচে বেশি লাভ আর জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির অর্গানিক মাধ্যম এই নীলচাষের বাণিজ্যিক উদ্যোক্তা হলেন রংপুরের যুবক নিখিল চন্দ্র রায়।

ইংরেজ আমলে নীলচাষ মানেই ছিল চাবুক হাতে দণ্ডায়মান ইংরেজ সাহেব। অসহায় কৃষকের কান্না, নিরুপায়ের আহাজারি এবং ক্ষুধার হিংস্র থাবা, এই ছিল নীলচাষীদের নিত্যসঙ্গী। এখন সেই নীলচাষ শোষণের পরিবর্তে হয়েছে আশির্বাদ। যা স্পস্ট কৃষকের হাসি আর খুনসুটিতে।

নীল মূলত আবাদ হয় ঝামেলা ছাড়াই। পাতা ঝরে জমি উর্বর করে এই গাছ। মুনাফার পাশাপাশি জ্বালানির চাহিদাও মেটে। তাই নীলচাষে এখন ঝোঁক বাড়ছে চাষীদের। খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় পতিত জমির পাশাপাশি ধানী জমিতেও নীল চাষ করছে রংপুরের কৃষকরা।

কৃষকরা বলছেন, নীল চাষের ফলে জমিতে উর্বরতা বাড়ে। ফলে সেই জমিতে অন্য ফসল চাষ করলে ফলন ভালো হয়।

নীলচাষের বাণিজ্যিক উদ্যোক্তা নিখিল চন্দ্র রায় বলেন, কৃষকরা যে অনাবাদি জমি ফেলে রাখতো, সেসব জমিতেই তাদের মাধ্যমে নীলচাষ শুরু করি। এর ফলে কৃষকরা বাড়তি আয়ের সুযোগ পাচ্ছে।

নীলচাষে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বেশি বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগও। রংপুরের কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভবিষ্যতে যদি এটি কৃষিপণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে সরকারিভাবে সব সহযোগিতা ও পরামর্শ আমরা দেবো।

এদিকে, প্রতিবছরই নীলচাষের পরিধি বাড়ছে। চলতি মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে নীলের বাণিজ্যিক চাষ হয়েছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকারের নীতি সহায়তা ও কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেলে উৎপাদন বাড়ানোর সাথে রফতানিও সম্ভব।

এসজেড/

Exit mobile version