Site icon Jamuna Television

অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড: হামাসের এ অভিযান ইসরায়েলিদের জন্য বিভীষিকা

ছবি: সংগৃহীত

হামাসের সামরিক অভিযান ছিল ইসরায়েলিদের জন্য অকল্পনীয়। তাই গাজার সীমান্তবর্তী শহর কিবুৎজে যখন ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ চালানো হয়, তা ছিলো বাসিন্দাদের জন্য বড় ধাক্কা। প্রায় ২০-২২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর তৎপরতায় উদ্ধার পান অনেকে। ততোক্ষণে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জীবিত উদ্ধার পাওয়াদের কাছে হামাসের ঐ হামলা ছিল রীতিমতো বিভীষিকা।

হামাসের অভিযানের ধকল নিতে পারছেন না ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তারাও। প্রায় তিন দিন পর পুরোপুরি শত্রুমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে এলাকাটি। কিবুৎজ অভিযানের সর্বাধিনায়ক মেজর জেনারেল ইতাই ভেরুভ বলেন, এখানে যুদ্ধ চলছে না, কোনো রণক্ষেত্রও না। সাধারণ মানুষদের বেডরুমে ঢুকে চালানো হয়েছে এলোপাতাড়ি গুলি। বিছানায় ঘুমন্ত শিশু, তাদের মায়েরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার। অন্তত আমি সারাজীবনে এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখিনি ইসরায়েলে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য মেজর ডরন স্পাইলম্যান বলেন, শিশুদের ওপর কারা এমন অমানবিক হামলা চালায়? কিবুৎজের এই নারকীয়তার সাথে মিলে যায় নাইন-ইলেভেনের হামলার। আল-কায়েদা বা জঙ্গি সংগঠন আইএসের সাথে কোনো পার্থক্য নেই হামাসের।

একজন নাগরিক বলেন, সকালেই গুজব শুনছিলাম, সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে কিবুৎজে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হলো ভয়াবহ গোলাগুলি, বোমাবর্ষণ। সেনাবাহিনী উদ্ধারের আগ পর্যন্ত টানা ২১ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলাম। এটা জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্ন। আরেক ভুক্তভোগী বলেন, গোপন জায়গা থেকে দেখছিলাম, অনেক বাসিন্দাকে আটক করছিল অস্ত্রধারীরা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি যে, সেখানে আমাদের পরিবারের সদস্য বা বন্ধুরা নেই। কিন্তু উদ্ধার পাওয়ার পর দেখি অবিশ্বাস্য চিত্র। চারপাশে শুধু লাশ আর লাশ।

সঠিক সংখ্যা জানা না গেলেও বহু বাসিন্দাকে জিম্মি করেছে হামাস যোদ্ধারা। এখনও মেলেনি অনেকের খোঁজ। আশঙ্কা, বাড়তে পারে প্রাণহানি। গাজা উপত্যকার লাগোয়া শহরটির বাসিন্দা এক লাখ ২৫ হাজার।

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে সংঘাতে নেমেছে, তার নাম দিয়েছে অপারেশন ‘আল-আকসা ফ্লাড’। এদিন হামাস বাহিনী ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে। এর আগে ২০২১ সালে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে ১১ দিন ধরে সংঘাত চলেছিল। কিন্তু এবারের আক্রমণ সবকিছু ছাপিয়ে যায়। গাজাতে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল বাহিনীও। এতে দুই পক্ষেরই ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে।

/এএম

Exit mobile version