Site icon Jamuna Television

গাজা যখন মৃত্যু উপত্যকা, তখন ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় দিতে রাজি নয় কেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো?

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ উপত্যকা গাজা। ফুরিয়ে আসছে খাদ্য ও সুপেয় পানি। নেই বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট। বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ মানুষ। পাখির মতো মেরে ফেলা হচ্ছে উপত্যকার নিরীহ বাসিন্দাদের।

মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হলেও এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের আশ্রয় দিতে অপারগতা জানিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলো। এরইমধ্যে জর্ডান ও মিশর স্পষ্ট করেছে তাদের অবস্থান। জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ বলেছেন, জর্ডান আর মিশরে ফিলিস্তিনি শরণার্থী ঢুকতে দেয়া হবে না। গাজার বাসিন্দাদের আশ্রয় দিতে আমরা অপারগ। সেখানে যে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে, তা সেখানেই সমাধান করতে হবে।

তবে চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও কেন এমন এমন আচরণ করছে আশপাশের দেশগুলো? বিশ্লেষকরা বলছেন, পূর্ব অভিজ্ঞতাই এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে দেশগুলোকে। ১৯৪৮ সালের পর বিভিন্ন সময়ের যুদ্ধে গাজা থেকে লাখ লাখ বাসিন্দা আশ্রয় নেয় জর্ডান, মিশরসহ আশপাশের দেশগুলোতে। যুদ্ধ শেষে যাদেরকে আর নিজ ভূখণ্ডে ফিরতে দেয়নি ইসরায়েল। সুযোগে দখল করে নেয় তাদের ফেলে যাওয়া ভূমি।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ফিলিস্তিনির বাস জর্ডানে। প্রায় ৩৩ লাখ। এছাড়া, সিরিয়া, লেবানন, সৌদি আরব আর মিশরেও বাস করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফিলিস্তিনি।

মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে সবচেয়ে বড় ফিলিস্তিনি কমিউনিটি রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে। প্রায় ৫ লাখ। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থী। যাদের বেশিরভাগই দেশ ছেড়েছে ১৯ শতকে। একবিংশ শতাব্দীতে এসেও যারা আর ফিরতে পারছেন না জন্মভূমিতে।

তাই আশপাশের দেশগুলো বলছে, নিজ ভূমিকে বাঁচিয়ে রাখতেই দেশ ছাড়া উচিৎ নয় ফিলিস্তিনিদের। কারণ, একবার জন্মস্থান ছাড়লেই তা চলে যাবে ইসরায়েলের দখলে। প্রাণের তোয়াক্কা না করে অনেক গাজাবাসী তাই তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক গাজাবাসী বলেন, ওদের (ইসরায়েল) উদ্দেশ্যই হলো আমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দিয়ে বসতি গড়া। আমি ‘নাকবা’ দেখেছি। চাই না, আবারও তার পুনরাবৃত্তি হোক। যত জুলুম নির্যাতনই হোক না কেন, আমরা গাজা ছাড়বো না।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ১৫ মে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ব্যাপক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ইসরায়েল। অস্ত্রের মুখে শেকড়ছাড়া করে লাখ লাখ মানুষকে। এরপর থেকেই দিনটি ‘নাকবা’ দিবস হিসেবে পরিচিত।

/এএম

Exit mobile version