Site icon Jamuna Television

শ্রীলঙ্কাকে বিধ্বস্ত করে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে অপ্রতিরোধ্য ভারত

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপে নিজেদের ৭ম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে বিধ্বস্ত করে ৩০২ রানের জয় পেয়েছে ভারত। সেই সাথে টানা সাত জয়ে চলতি আসরের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো রোহিত শর্মার দল। আগে ব্যাট করতে নেমে ভিরাট কোহলি, শুভমান গিল ও শ্রেয়াস আইয়ারের ফিফটিতে ৩৫৭ রান সংগ্রহ করে ভারত। লক্ষ্য তাড়া করতে মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজের বোলিং তোপে ১৯ দশমিক ৪ বলে মাত্র ৫৫ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ভারতের হয়ে শামি নেন ৫টি উইকেট। তাতেই জহির খানকে টপকে বিশ্বকাপে ভারতের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার এখন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়া ৩৫৮ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই পাথুম নিশাঙ্কার উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। জাসপ্রিত বুমরাহর করা আউট সুইং বলের লাইন বুজতে না পেরে লেগ বিফোরে কাঁটা পড়েন লঙ্কান এ ওপেনার। এরপর মোহাম্মদ সিরাজের বোলিং তোপে মাত্র ৪ রানের মধ্যে আরও তিন ব্যাটারের বিদায়ে বিপর্যয়ে পড়ে লঙ্কানরা। সিরাজ ৯ বলের ব্যবধানে নেন ৩ উইকেট। একে একে সাজঘরে ফেরেন দিমুথ করুণারত্নে, সাদিরা সামারাবিক্রমা ও কুশল মেন্ডিস। এই বিপর্যয় থেকে লঙ্কানরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

এরপর বোলিং আক্রমণে এসে টানা দুই উইকেট নিয়ে লঙ্কানদের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন শামি। এরপর দুশমান্থ চামিরাকেও আউট করেন এ ডানহাতি পেসার। একপ্রান্ত আগলে রাখা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের লোয়ার অর্ডারও দুমড়ে-মুচড়ে দেন শামি। শেষ দিকে কাসুন রাজিথাকে আউট করে ৫ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন শামি। সেই সাথে চলতি বিশ্বকাপে তিন ম্যাচে ১৪ উইকেট শিকার করেন ভারতীয় এ পেসার। শেষদিকে ৫ রান করা দিলশান মাদুশঙ্কাকে আউট করে লঙ্কানদের ইনিংস গুটিয়ে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়াও ৩টি পান মোহাম্মদ সিরাজ। ১টি করে উইকেট নেন জাসপ্রিত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা।

এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে ভালো শুরুর আভাস দেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তবে ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই রোহিতকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান লঙ্কান পেসার দিলশান মাদুশাঙ্কা। এই বাঁহাতি পেসারের ইন সুইং বলের লাইনই বুঝতে পারেননি ৪ রান করা রোহিত।

এরপর ক্রিজে আসেন ইনফর্ম ব্যাটার ভিরাট কোহলি। ২য় উইকেট জুটিতে তরুণ ওপেনার শুভমান গিলকে সঙ্গী করে দলের হাল ধরেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। লঙ্কান বোলারদের বাজে বল পেলেই বাউন্ডারিতে পরিণত করেন ভিরাট। অন্যপ্রান্তে, শুরুতে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন গিল। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে এই দুই ব্যাটার মিলে ৬০ রান তুলে।

দু’জনেই পেয়া যান ফিফটির দেখা। ৫০ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৭০তম অর্ধশতকের দেখা পান কোহলি। অন্যদিকে ৫৫ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটির দেখা পান গিল। দুজনেই ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে কিন্তু একজনও পাননি তিন অঙ্কের দেখা। তবে তা হতে দেননি লঙ্কান পেসার দিলশান মাদুশাঙ্কা। এই বাঁহাতি পেসারের করা স্লোয়ার বাউন্সার বলে টপ এজ হয়ে উইকেটের পেছনে কুশাল মেন্ডিসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৯২ রান করা গিল। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কোহলি। তিনিও মাদুশঙ্কার কাটারে ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দেন পাথুম নিশাঙ্কার হাতে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৯তম সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েও ফিরতে হয় ৮৮ রান করা কোহলিকে।

চতুর্থ উইকেটে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে ভারতের ইনিংস মেরামত শুরু করেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রাহুল। এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার ফিরে যান ২১ রান করে। ব্যর্থ হয়েছেন সুরিয়া কুমার যাদবও। তিনি আউট হন ১২ রান করে। একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলা আইয়ার আউট হয়েছেন ৫৬ বলে ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে।

এরপর মোহাম্মদ শামি আউট হলে ভারতের গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে। অবশ্য জাদেজার ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংসে বড় পুঁজি নিশ্চিত করে ভারত। ইনিংসের শেষ বলে তিনি রান আউট হলেও শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১ রান করা বুমরাহ। বল হাতে ৮০ রান খরচা করলেও ৫ উইকেট পেয়েছেন মাদুশঙ্কা। একটি উইকেট নেন দুশমান্থ চামিরা।

/আরআইএম

Exit mobile version