Site icon Jamuna Television

গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি কমায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধায় যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, করতোয়া ও ঘাঘটসহ নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনো পানিবন্দি থাকায় দুর্ভোগ কমেনি প্রায় ১৪ হাজার পরিবারের মানুষের। কোথাও কোথাও বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছে বির্স্তীণ এলাকার প্রায় ১৮শ’ হেক্টর জমির আমন ধান, বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসলি। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে আগাম প্রণোদনা হিসেবে বেশ কিছু বীজ তলা তৈরি করা আছে বলে জানিয়েছেন গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আ.ক.ম রুহুল আমীন।
অপরদিকে, পানি চাপ ও তীব্র স্রোতের কারণে ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। এরেই মধ্যে নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার অন্তত দুই হাজার বসতভিটে, গাছপালা ও আবাদি জমি। এছাড়া ফুলছড়িতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুন্দরগঞ্জের ভাটি কাপাসিয়ার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের আংশিক নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ফলে ভাঙন আতঙ্কে তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা।
কাপাসিয়ার চরে পানিবন্দি আয়নাল হক বলেন, পাঁচদিন বাড়ির উঠানে পানি ছিলো। এখন পানি কমতে শুরু করায়য় উঠান স্যাতস্যাতে ও বাড়ির চারপাশে কাদায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মোল্লারচরের আবদুর রহিম জানান, পানিবন্দি থাকায় তাদের কাজকর্ম নেই। পানি কমলেও তাদের ঘরে খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।
কামারজানি, চন্ডিপুর গ্রামের কালাম মিয়া ও সেকেন্দার আলী জানান, কয়েকদিন পানিবন্দি থাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটের সাথে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। সরকারের ত্রাণতৎপরতা চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বলেন, পানিবন্দি মানুষের জন্য ১১০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া যেসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে দ্রুত সেখানে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে। এছাড়া পানিবন্দি মানুষের মধ্যে ডায়রিয়াসহ রোগবালাই যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য মেডিকেল টিম খোঁজখবর নেয়াসহ প্রয়োজনীয় ঔষধ বিতরণ করছে। সেই সাথে ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরি করে পূর্ণবাসনে তাদের নগদ টাকা, ঢেউটিন দেয়া হবে।
বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নঞ্চলের ৭১টি প্রাথিমক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুবুর রহমান জানান, নদ-নদীর পানি কমে তা বিপদসীমার অনেক নিচে রয়েছে। বৃষ্টি ও উজানের ঢল না হলে নতুন করে পানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। এছাড়া ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় কাজ চলমান রয়েছে।
Exit mobile version