Site icon Jamuna Television

ঘোড়াশাল নাম এলো যেভাবে

ছবি: প্রতিকী

নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার পৌরসভা ঘোড়াশাল। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে অবস্থিত ঘোড়াশাল শিল্প এলাকা হিসেবেও সুপরিচিত। এখানে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদ্যুৎকেন্দ্র। এছাড়া রয়েছে, এশিয়ার অন্যতম বড় ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা। যেটি রোববার (১২ নভেম্বর) উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঘোড়াশাল। নামটি শুনতে বেশ মজার। তবে এই নামকরণের পেছনে রয়েছে মজার ঘটনা। আছে- ঐতিহাসিক স্মৃতিও!

জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিনশ’ বছর আগে ঈশা খাঁর বংশধর শরিফ খান শরিফপুরের জমিদারি সামলাতেন। তিনি জমিদার হলেও ছিলেন স্বাধীন নরপতি। ফলে কর পাওয়া ছাড়া তার জমিদারিতে মোগল সম্রাটের হস্তক্ষেপের অধিকার ছিল না। শরিফ খানের বিরুদ্ধে তার প্রজা মোহাম্মদ রফির পুত্র দিল্লির রাজদরবারে গুরুতর একটি অভিযোগ করেছিলেন।

অভিযোগের বিচারকে কেন্দ্র করে জমিদার শরিফ খানের সঙ্গে সম্রাট আওরঙ্গজেবের চরম বিরোধ দেখা দেয়। জমিদার শরিফ খানের জমিদারি এলাকায় শেখ গোলাম মোহাম্মদ নামে এক বিচক্ষণ ব্যক্তি বাস করতেন। এলাকায় তার প্রভাবও ছিল বেশ। বিচক্ষণ হিসেবে দিল্লির রাজদরবারেও তার সুনাম ছিল। জমিদার-রাজদরবারের বিরোধ মেটাতে সম্রাট দ্বারস্থ হন গোলাম মোহাম্মদের। গোলাম মোহাম্মদ দুই পক্ষের বিবাদ মিটিয়ে দেন এবং সম্রাটের সঙ্গে শরিফ খানের সন্ধি করিয়ে দেন। তার এমন বিচক্ষণতায় সম্রাট আওরঙ্গজেব ও জমিদার শরিফ খান উভয়েই অত্যন্ত খুশি হন। পুরস্কার হিসেবে তাকে তখন সম্রাট আওরঙ্গজেব ঘোড়া ও মূল্যবান শাল উপহার দেন।

জনশ্রুতি আছে, উপহারের কথা ছড়িয়ে পড়লে ঘোড়া এবং শাল দেখার জন্য শেখ গোলাম মোহাম্মদের বাড়িতে দলে দলে মানুষ ভিড় করতে থাকে। তাদের গন্তব্য জিজ্ঞেস করা হলে জবাব মিলতো, ঘোড়া ও শাল দেখতে যাই। ধীরে ধীরে সেটি ঘোড়া-শাল নাম হতে থাকে। এক পর্যায়ে শেখ গোলাম মোহাম্মদের গ্রাম ও অঞ্চলটি ঘোড়াশাল নামে পরিচিত পায়।

/এনকে

Exit mobile version