Site icon Jamuna Television

কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হচ্ছে না কেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের?

হাসিনুর রহমান:

বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেট যেন এক জায়গায় থমকে আছে। ২০১১, ১৫ ও ১৯ বিশ্বকাপে সমান ৩টি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। গত চার বছরে বাংলাদেশ দল দ্বিপাক্ষিক সিরিজে দারুণ করেছে। কিন্তু ভারত বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে মাত্র ২ জয় প্রশ্নবিদ্ধ করছে টাইগারদের সামগ্রিক উন্নতি নিয়ে। উঠছে প্রশ্ন, কেন প্রত্যাশিত সাফল্য পাচ্ছে না বাংলাদেশ? এর পেছনে বহু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে প্রধান কারণ দুটি।

প্রথমত অকার্যকর অ্যাকাডেমি। বিসিবির এই ভবনটি অ্যাকাডেমি নামে পরিচিত হলেও বর্তমানে এটি হোস্টেল ছাড়া আর কিছুই নয়। বিশ্বকাপের হোস্ট ভারতকে দেখলে অনুধাবন করা যায়, গত এক যুগে ভারতের অপ্রতিরোধ্য হওয়ার পেছনে মূল স্তম্ভ বলা হয় বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিকে।

যুব দল থেকে নতুন ক্রিকেটার তৈরি করা থেকে শুরু করে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ক্রিকেটারদের নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করা হয় এখানে। বিশেষ করে ভারতীয় পেস ডিপার্টমেন্টের উন্নতিতে এই বিসিসিআইয়ের অ্যাকাডেমির অবদান অনস্বীকার্য।

কেবল ক্রিকেটারই নয়, কোচদেরও প্রস্তুত করা হয় এখানে। ঠিক যেমনটা এনসিএর দায়িত্ব পালন করে অনূর্ধ্ব-১৯ হয়ে জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। এখন ভিভিএস লক্ষ্মণ অ্যাকাডেমিতে কাজ করে নিজেকে প্রস্তুত করছেন দ্রাবিড়ের উত্তরসূরি হিসেবে।

তবে বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়ার প্রধান কারণ ঘরোয়া ক্রিকেটের দুর্বল অবকাঠামো। মন্থর উইকেট, পক্ষপাতমূলক আম্পায়ারিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগ আছে। তবে প্রধান সমস্যা– ম্যাচ স্বল্পতা।

রঞ্জি ট্রফিসহ ভারতে ফোরডের তিনটি, ওয়ানডেতে বিজয় হাজরাসহ চারটি আর টি-টােয়েন্টিতে হয় আইপিএল ও মোস্তাক আলীর মতো টুর্নামেন্ট। বছরে রাজ্য টুর্নামেন্টসহ খেলা হয় ৯ মাস। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থা কোথায়?

এনসিএল আর বিসিএল নিয়ে প্রতি বছর সর্বোচ্চ ১০টি করে চার দিনের ম্যাচ খেলে একজন ক্রিকেটার। আর ওয়ানডে ফরম্যাটের একমাত্র টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সুপার লিগে উঠলে সর্বােচ্চ ১৬ ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় ক্রিকেটাররা। যা নতুন ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হওয়ার জন্য খুবই নগণ্য। একইভাবে বাংলাদেশে একমাত্র টি-টোয়েন্টির আসর হলো ‘বিপিএল’।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, আমরা সর্বদা জাতীয় দল নিয়ে চিন্তা করি কিন্তু চিন্তা করতে হবে সামগ্রিক ক্রিকেট নিয়ে। আমাদের যে দুইশ’ বিশ জন ক্রিকেটার রয়েছে, তারা যেন ছয় মাস ক্রিকেট খেলতে পারে; সেই ব্যবস্থা করতে হবে। বিপিএলে প্রচুর খেলোয়াড় রয়েছে, যারা ইনজুরিতে পড়েন অথবা অফ-ফর্মে থাকেন। এক্ষেত্রে অন্য খেলোয়াড়দের দলে সুযোগ আসে ব্যক্তিগত সম্পর্কের ভিত্তিতে, পারফরম্যান্সের কারণে নয় বলে মনে করেন তিনি।

/এএম

Exit mobile version