Site icon Jamuna Television

গাজিপুর সড়কে বিআরটির জটিলতা কাটছেই না

আল-আমিন হক অহন:

মামলার ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রজেক্ট টেনে নিচ্ছে ঠিকাদার। মানছে না নির্মাণ বিধিমালা। শেষ মুহূর্তে কাজ আটকে যাওয়ার ভয়ে চীনের দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে না সরকার। এমন জটিলতায় কবে শেষ হবে কাজ? দিনক্ষণ ঠিক রেখে সেই সুখবর দিতে পারছেন না কর্তা ব্যাক্তিরাও।

গেল বছর আগস্টে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন উল্টে গার্ডার চাপায় ৫ জন মারা যান। এরপর সাধারণ মানুষ ভেবেছিলেন এবার বোধহয় দ্রুত কাজ শেষ হবে এই প্রকল্পের। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আসবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ৫ প্রাণের ক্ষতিপূরণ মাত্র ২০ লাখ টাকা দিয়ে অনিরাপদ ও ঢিমেতালেই কাজ চলতে থাকে। এতে শত শত মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তি ঢাকা-গাজীপুর মহাসড়ক।

এই সড়ক পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজে উঠতে হলে অর্ধেক সড়ক নিচ দিয়ে আসতে হয়। কেননা ফুটওভার ব্রিজটি সড়কের মাঝখানেই শেষ হয়ে আছে।

উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়া বহু শিক্ষার্থী শিশুকাল থেকেই দেখে আসছেন বিআরটির কাজ চলছে। ভোগান্তিও সয়ে আসছেন সেই ছোটেবলা থেকেই।

যানজটে নাকাল, কিংবা ধুলাবালিতে মাখামাখি- গাজীপুর এয়ারপোর্ট সড়কের এই অবস্থা মানতে হচ্ছে চীনা দুই ঠিকাদারের মামলার ভয়ে। জানা গেছে নতুন করে টেন্ডার করাসহ নানা ঝামেলার জুজু দেখিয়ে আরাম আয়েসে কাজ করছে ঠিকাদার দুই কোম্পানি। মানছে না চুক্তির কথা, কিংবা নির্মাণবিধি।

এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালইয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বললেন, শুধু টেন্ডার বাতিল একমাত্র শাস্তি নয়। টেন্ডার বাতিল করলে কাজটি আরও ২ বছর পিছিয়ে যেত। নতুন করে খরচ বেড়ে যেত।

এদিকে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম বলেন, একজনকে ১০ হাত পানির নিচে নিতে হলে আমাকেও ৯ হাত নিচে যেতে হচ্ছে। এ জন্য শাস্তি দিতে পারছি না।

তিনি বলেন, এখন আমরা শেষ পর্যায়ে। এখন যদি এদের বাতিল কর দেই তাহলে অনেক বেশি জটিলতার সামনে পড়ব আমরা।

তবে কি সরকারের চাইতে ঠিকাদারের শক্তি বেশি! নাকি যোগসাজশেই এই বিলম্ব? এমন প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে। সচিব জানান, তারা চীনের রাষ্ট্রদূতকেও এখানে ডেকেছিলেন। কাজ দ্রুত শেষ করতে দেয়া হয়েছে চাপ।

এ নিয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক, ড. শামসুল হক বলেন, কনট্রাক্টর যখন দেখে কাজ বুঝে নেয়ার কেউ নেই। এসব অন্ধ লোক বসে আছে। তখন জুজুর ভয় দেখায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ যদি পেশাদার হতো, তাহলে সেভাবে সে ট্যাকেল দিতো।

এই যখন অবস্থা তখন উন্নয়ন দুর্ভোগ থেকে কবে মুক্তি পাবে গাজীপুরবাসী? এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, দিনক্ষণ তো বলা যায় না। সাত আট মাসের মধ্যে দেখি শেষ করা যায় কি না।

এটিএম/

Exit mobile version