Site icon Jamuna Television

দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই শেষ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস

ছবি: সংগৃহীত

দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাহমুদুল হাসান জয়ের ৮৬ রানের সৌজন্যে প্রথম দিন শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১০ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। শেষ উইকেট নিতে একদমই সময় লাগেনি সফরকারীদের। টিম সাউদির করা.২য় দিনের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হন শরিফুল ইসলাম। আগের দিনের ৩১০ রানেই থামে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) দৃষ্টিনন্দন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের দিনের ৯ উইকেটে ৩১০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামে দুই অপরাজিত ব্যাটার তাইজুল ইসলাম এবং শরিফুল ইসলাম। দিনের প্রথম বলে টিম সাউদির দারুণ ডেলিভারিতে লেগ বিফোর উইকেট হন শরিফুল।

সাউদির স্ট্যাম্পের ওপর করা ডেলিভারি ডিফেন্স করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন শরিফুল। বল তার প্যাডে আঘাত করার পর জোরাল আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে সফল হয় সফরকারীরা। ৩ চারে ৯ বলে ১৩ রান করেন শরিফুল। তাইজুল ইসলাম অপরাজিত থাকেন ৮ রানে।

কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামা অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপস। এজাজ প্যাটেল ও কাইল জেমিসন নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট নেন ইশ সোধি ও টিম সাউদি।

এর আগে, টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খুব একটা মন্দ হয়নি বাংলাদেশের। ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন এজাজ প্যাটেল। তার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে পড়া বলে কাট করতে যান জাকির হোসেন, কিন্তু জায়গা ছিল না এর জন্য। ৪১ বলে ১২ রান করে ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় জাকিরকে।  

এরপর মাহমুদুলের সঙ্গী হন নাজমুল হোসেন শান্ত। টাইগার অধিনায়ক শুরু থেকেই ছিলেন কিছুটা মারমুখী। ৩৫ বলের ইনিংসে ছক্কাই হাঁকান তিনটি, অথচ গত ১৫ ম্যাচেও এতগুলো ছক্কা হাঁকাননি তিনি। এমন ব্যাটিংয়ে পর তার ইনিংসের শেষটা হয়েছে হতাশাতেই।

গ্লেন ফিলিপসের ফুলটস বল বেরিয়ে এসে খেলতে যান শান্ত। কিন্তু এগিয়ে আসায় ব্যাটের টাইমিংটা ঠিকঠাক করতে পারেননি। ব্যাখ্যাতীত শটে ডিপ মিড অনে দাঁড়ানো কেইন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তার আউটের পর ব্যাটার, বোলার ও ফিল্ডার সবার চোখেই ছিল বিস্ময়।

শান্ত আউট হওয়ার পর মুমিনুল হককে নিয়ে ইনিংস এগিয়ে নিচ্ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরিও পেয়ে যান তিনি। তবে দারুণ ধৈর্য, মনোসংযোগের ইনিংসটি সেঞ্চুরি ছুঁতে পারেনি। ইশ সোধির বলে স্লিপে দাঁড়ানো মিচেলের হাতে ক্যাচ দেন মাহমুদুল। ১৬৬ বলের ইনিংসে ১১ চারে ৮৬ রান করে আউট হন তিনি।  

তার আগেই অবশ্য সাজঘরে ফিরে যান মুমিনুল। ব্যাকফুটে কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে আসেন তিনি। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ৫ বলের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে যায় বাংলাদেশ।  

নতুন ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের সঙ্গী হন অভিষিক্ত শাহাদাৎ হোসেন দীপু। তারা দু’জন ১০ বল খেলার আগেই দ্বিতীয় সেশন শেষ হয়। কিন্তু ফেরার পর মুশফিকুর রহিমও দায়িত্বহীনভাবে আউট হয়ে যান। এজাজ প্যাটেলের বলে উইকেট থেকে বেরিয়ে এসে তেড়েফুড়ে খেলতে যান তিনি। কিন্তু ২২ বলে ১২ রান করা ব্যাটার মিড অফে দাঁড়ানো উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দেন।  

এমন হতাশার পর পরের তিন স্বীকৃত ব্যাটার সেটি বাড়িয়ে দেন আরও। কাইল জেমিসনের বাউন্সারে কী করবেন যেন বুঝেই উঠতে পারেননি মিরাজ, ক্যাচ দেন স্লিপে। ফিলিপসের বলে শান্তর মতোই অদ্ভুতভাবে আউট হন শাহাদাৎ।  

তার নিচু হওয়া বল কবজির মোচড়ে খেলতে গিয়ে মিডউইকেটে দাঁড়ানো হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ৫৪ বল খেলে ২৪ রান করেন তিনি। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার সোহানও আউট হন ফিলিপসের বলেই, লেগ স্টাম্পের বাইরের বল তার ব্যাটে লাগলে উইকেটরক্ষক ব্লান্ডেল দারুণ এক ক্যাচ নেন। টেস্ট অভিষেকে চার উইকেট পান তিনি।

তার বিদায়ের পর বাংলাদেশের রান তিনশতে নিয়ে যাওয়ার আশা দেখাচ্ছিলেন নাঈম হাসান। কিন্তু তিনিও জেমিসনের বেশ বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন। ৩ চারে ২৭ বলে ১৬ রান করেছিলেন নাঈম। কিন্তু শেষদিকে অলআউট হতে হয়নি বাংলাদেশকে। শেষ উইকেট জুটিতে ২০ রান করে অপরাজিত ছিলেন শরিফুল ও তাইজুল ইসলাম। সেটি প্রথম বলেই শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনে।

/আরআইএম

Exit mobile version