Site icon Jamuna Television

মালয়েশিয়ায় ভবন ধসে নিহত শ্রমিক আহেদের পরিবারে শুধুই অনিশ্চয়তা আর হাহাকার

পাবনা প্রতিনিধি:

মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যে ভবন ধসে নিহত তিন বাংলাদেশি শ্রমিকের একজন হলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার আহেদ আলী (৪৩)। তার মৃত্যুর খবর জানার পর থেকে শোকের ছায়া নেমে এসেছে স্বজনদের মাঝে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের সাঁইপাই গ্রামের মৃত ওসমান মন্ডল ও আবেদা খাতুন দম্পতির ছেলে আহেদ আলী। ৪ ছেলে ও ৩ মেয়ের মধ্যে পঞ্চম সন্তান আহেদ। ধার করে এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বছর দেড়েক আগে স্বপ্ন পূরণের আশায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন আহেদ আলী। সেখানকার পেনাং রাজ্যে একটি প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি।

আশা ছিল অভাবী সংসারে একটু স্বচ্ছলতা ফেরানোর। দুই ছেলেকে মানুষ করার। এজন্য ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ফ্রি ভিসায় মালয়েশিয়ায় যান আহেদ আলী। গত ২৮ নভেম্বর কর্মরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় আহেদ আলীসহ তিন বাংলাদেশি শ্রমিকের।

মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে দিশেহারা আহেদ আলীর স্ত্রী হালিমা খাতুন রত্না। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ভবিষ্যতের চিন্তায় তার কান্না যেন থামছেই না। কীভাবে শোধ হবে ঋণের টাকা, কীভাবে চলবে সংসার তা ভেবেই যেন অন্ধকার নেমে আসছে চোখে।

আহেদ আলীর স্ত্রী হালিমা খাতুন রত্না জানান, মৃত্যুর আগের দিন সন্ধ্যায় তার সাথে শেষ কথা হয় আহেদ আলীর। সবার খোঁজখবর নিয়েছিলেন তিনি। পরদিনই আসে মৃত্যুর সংবাদ।

হালিমা খাতুন রত্না আরও বলেন, এখনও দুই লাখ টাকা ঋণ আছে। সেই টাকা এখন কীভাবে পরিশোধ করবো, আর দুই ছেলেকে মানুষ করবো সেই চিন্তাই যেন তাড়া করছে তাকে। আহেদ আলীর দুই ছেলে রাসেল (১২) ফৈলজানা দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণি এবং ছোট ছেলে রাহিম হোসাইন (৮) সাঁইপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।

আহেদ আলীর বৃদ্ধ মা আবেদা খাতুন (৭০) ভালো করে হাঁটতে পারেন না। ছেলের শোকে কথা বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছেন। কাঁদতে কাঁদতে তার দু’চোখ শুকিয়ে গেছে। শুধু দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ছেন আর ছেলেকে ডাকছেন। ছেলের মরদেহ শেষবারের মতো দেখার আকুতি জানান তিনি।

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেদুয়ানুল হালিম বলেন, এ বিষয়ে তাদের কিছু করণীয় নেই। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।

এসজেড/

Exit mobile version