Site icon Jamuna Television

ইসরায়েলের চোখে ‘সবচেয়ে নিষ্ঠুর মানুষ’, কে এই হামাস নেতা ইয়াহিয়া?

এক বছর আগে প্রকাশ্যে ইসরায়েলে হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার। এরপর থেকেই আলোচনা তুঙ্গে তাকে ঘিরে। এবার যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে আবারও সংঘাতের জন্য তাকে দায়ী করছে ইসরায়েল। তেল আবিবের দাবি, বিরতির মাঝে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপের সিদ্ধান্ত ছিল এই হামাস নেতার। এমন পরিস্থিতিতে ইয়াহিয়া সিনাওয়ারের প্রভাব ও ইসরায়েলে অভিযানের পেছনে তার ভূমিকা নিয়ে তুমুল চর্চা চলছে। খবর রয়টার্সের।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে গাজার এক সমাবেশে প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি বার্তা দেয়া হয়। বলা হয়, বাধ ভাঙা জোয়ারের মতো আমরা ফিরবো। অগণিত রকেট, সংহতির সাথে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিদের নিয়ে স্রোতের মতো ফিরবো আমরা। এই হুমকি দেয়া ব্যক্তি গাজায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার নেতা ইয়াহিয়া সিনাওয়ার। সংঘাতের প্রায় দুই মাসের মাথায় আবারও আলোচনায় ইয়াহিয়া। তিনি ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের একজন। ইহুদি ভূখণ্ডে স্বাধীনতাকামী সংগঠনের এই নজিরবিহীন হামলার পেছনে অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয় তাকে। গোটা উপত্যকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েও তাকে খুঁজে বের করতে পারেনি তেল আবিব।

ইয়াহিয়া সিনাওয়ার প্রভাবশালী নেতা হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস। মাত্র ১৯ বছর বয়সে প্রথম ইসরায়েলি সেনাদের কাছে গ্রেফতার হন ইয়াহিয়া। ২০১১ পর্যন্ত কয়েক দফায় জীবনের বড় অংশ, প্রায় ২৩ বছর কারাবাস করেন তিনি। দীর্ঘ এই কারাবাসই তাকে তুমুল দুঃসাহসী, কর্তৃত্ববাদী এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী করে তোলে বলে মনে করা হয়। কারাগারেই বন্দিদের নেতা হিসেবে প্রথম আবিভূত হন তিনি। সেখানেই ইয়াহিয়ার চারিত্রিক বিষয়গুলো নজরে আসে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের। তাকে ১৮০ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা এক ইসরায়েলি গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি- স্বভাবে চরম নির্মম তিনি। ইহুদিদের হত্যাই তার একমাত্র টার্গেট।

মিশেল কৌবি নামে সেই ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, আমার দেখা সবচেয়ে নিষ্ঠুর মানুষ ইয়াহিয়া। তিনি সবসময় ইহুদিদের হত্যার কথা চিন্তা করেন। মুক্তির পর ইসরায়েলের সাথে লড়াইয়ের পরিকল্পনা সে জেলে বসেই করতো। কারাগারে বসেই ইসরায়েলিদের হত্যার নির্দেশ দিতো। এমনকি ইসরায়েলি গোয়েন্দার সাথে যোগসাজশের অভিযোগে তিনি কমপক্ষে ১২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছেন।

নেতানিয়াহু প্রশাসনের দাবি, ইরানের সাথে হামাসের সুসম্পর্ক স্থাপনের পেছনেও রয়েছে ইয়াহিয়া সিনওয়ার ভূমিকা। মিশেল কৌবি জানান, জেলে থাকতেই ইরানের সাথে হামাসের সম্পর্ক স্থাপন করেছিল ইয়াহিয়া সিনাওয়ার। তাদের কাছ থেকে বন্দুক, মিসাইল, গ্রেনেডসহ সব অস্ত্র পাওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।

যুদ্ধবিরতির পর ফের সংঘাত শুরুর জন্য হামাসের এই নেতাকেই দায়ী করছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের দাবি, বিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইসরায়েলে রকেট হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তারই।

এসজেড/

Exit mobile version