Site icon Jamuna Television

বাংলাদেশে রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা: ট্রাকেই পচছে শত শত টন পেঁয়াজ, মাথায় হাত ভারতীয় ব্যবসায়ীদের

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: বাংলাদেশে রফতানির জন্য ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মজুত করা ছিল কয়েক শত টন পেঁয়াজ। আচমকা গত বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। এরপরই শত শত টন পেঁয়াজ এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে থেকে পচন ধরেছে পেঁয়াজগুলোতে, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও। ব্যাপক ক্ষতি এড়াতে স্থানীয় বাজারে পানির দরে পেঁয়াজ বিক্রির চেষ্টা করলেও নেয়ার মতো ক্রেতা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। রফতানি বন্ধের প্রভাবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। এদিকে, ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে আটকা পড়েছে বাংলাদেশগামী পেঁয়াজের ট্রাক। রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশগামী সবচেয়ে বড় পেঁয়াজের চালান আটকে পড়েছে ভারত-বাংলাদেশের ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তে। এই সীমান্তে প্রায় ৩০টি ট্রাকে ৪৫০ টনের বেশি পেঁয়াজ পড়ে আছে খোলা আকাশের নিচে। এছাড়াও মেহেদীপুর, সোনা মসজিদ, পেট্রাপোল, বেনাপোল ও হিলি সীমান্তেও আটকা পড়েছে বেশকিছু পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক। সবমিলিয়ে যার পরিমাণ প্রায় ৫৫০ টনের বেশি। ভারতীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলতি সপ্তাহে ভারতের স্থানীয় বাজার ও রফতানির জন্য ব্যাঙ্গালোর, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান থেকে পেঁয়াজ পশ্চিমবঙ্গের বাজারে ঢুকেছে। এরমধ্যে আচমকা রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে ব্যবসায়ীরা। কারণ স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের যথেষ্ট মজুদ রয়েছে। ফলে সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজ এত স্বল্প সময়ের মধ্যে স্থানীয় বাজারেও বিক্রি সম্ভব হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় পাইকারি বাজারে বিক্রি সম্ভব হলেও তাতে দাম মিলছে অর্ধেকের কম। ফলে  সীমান্তে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এনিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে একজন ব্যবসায়ী স্বদেশ মন্ডল বলেন, আপাতত যে কটি গাড়ি সীমান্তে চলে এসেছে সেগুলি প্রায় ৭ থেকে ১৫ দিন সীমান্তেই আটকে রয়েছে। পচনশীল দ্রব্য, তাই প্রতিদিন আমাদের ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা অনুরোধ জানিয়েছি, এই গাড়িগুলো বাংলাদেশে রফতানি করার অনুমতি দেয়া হোক। নয়তো প্রতি গাড়িতে আমরা ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকার লোকসান করব। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেডের (ডিজিএফটি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকবে। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর ভারত প্রতি টন পেঁয়াজের রফতানি মূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলা হয়েছিল। যদিও তার আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে রফতানি। ফলে নতুন করে সমস্যা তৈরি হয়েছে। এসজেড/
Exit mobile version