Site icon Jamuna Television

জাপানে জ্বলন্ত বিমান থেকে বেঁচে ফিরেছেন ৩৭৯ জন, অলৌকিক নাকি ভিন্ন কোনো কারণ?

জাপানে রানওয়েতে দুই বিমানের সংঘর্ষে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরও সব যাত্রীর প্রাণে বেঁচে যাওয়ার ঘটনা বিস্ময় ছড়াচ্ছে গোটা বিশ্বে। মূলত, কেবিন ক্রু’দের বুদ্ধিমত্তাই বাঁচিয়েছে সাড়ে তিন’শর বেশি প্রাণ। দুর্যোগ মুহূর্তেও মাথা ঠান্ডা রেখে যাত্রীদের সুষ্ঠুভাবে ও নিরাপদে বের করতে সক্ষম হয়েছেন তারা, এতে প্রশংসায় ভাসছেন ওই বিমানের কেবিন ক্রুরা। ভবিষ্যতে বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এড়াতে এবং সফল উদ্ধারে এ ঘটনা নজির স্থাপন করেছে বলে মত বিশ্লেষকদের। খবর সিএনএন এর।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে রাজধানী টোকিওর হানেদা বিমানবন্দরের ঘটে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা। রানওয়েতে অবতরণ করার সময় সংঘর্ষের কারণে আগুন ধরে যায় জাপান এয়ারলাইন্সের ‘ফ্লাইট ৫১৬’ বিমানটিতে। সে সময় ওই বিমানে ৩৭৯ জন যাত্রী ও ক্রু ছিল বলে জানিয়েছে জাপান এয়ারলাইন্স। তবে এত ভয়ানক অগ্নিকাণ্ডের পরও জ্বলন্ত বিমান থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদে নেমে আসেন তারা।

সংশ্লিষ্টার জানান, আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা করা হচ্ছিল। অথচ কেবিন ক্রুদের বুদ্ধিমত্তার কারণে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এটিকে অবিশ্বাস্য ঘটনা বলে আখ্যা দিয়েছেন অনেকে। অনেকে বলছেন, এ ঘটনা অলৌকিক। তবে ভয়নক আগুনের পরও অক্ষত হয়ে বেঁচে ফেরা যাত্রীদের বক্তব্যেই স্পষ্ট হয় গোটা ঘটনা।

যাত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, এ ঘটনার বেশিরভাগ কৃতিত্বই কেবিন ক্রুদের। সংকটময় সেই মুহূর্তেও ঠাণ্ডা মাথায় তারা সামাল দিয়েছেন পুরো পরিস্থিতি। আগুন লাগার পর মাইক্রোফোন কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এসময় নিজেরাই জোরে জোরে যাত্রীদের দিতে থাকেন নির্দেশনা। নিরাপদে বের করেছেন একে একে সব যাত্রীকে।

বিমানের এক যাত্রী বলেন, বিমান অবতরণের সময় জোরে ধাক্কা অনুভব করি। জানালা দিয়ে তাকিয়ে আগুনের শিখা দেখতে পাই। এরপর বিমান থামার এক মিনিটের মধ্যে পুরো কেবিন ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। কেউ কেউ চিৎকার করলেও, কেবিন ক্রুর নির্দেশনা মতো সবাই সিটে বসে ছিল। হুড়োহুড়ি না করায় সবাই সহজে বের হতে পেরেছি। আর সবাই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে রেখে এসেছে। সত্যি বলতে ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, হয়তো মারা যাবো।

ওই বিমানে থাকা বয়স্ক এক যাত্রী জানান, বিমান অবতরণের সময় বড় ঝাঁকুনি অনুভব করি। এরপরই ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় ভেতরটা। কেবিন ক্রুরা আমাদের শান্ত থাকার নির্দেশনা দেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সবাই বের হতে সক্ষম হয়েছিল।

এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, আপদকালীন পরিস্থিতিতে মোকাবেলায় ক্রু’রা যে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন, সেটির সঠিক ব্যবহার করতে পেয়েছেন। এছাড়া আগুন ছড়াতে কিছুটা সময় পাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দেয়া সম্ভব হয়েছে তাদের। এই উদ্ধারকাজ ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনার জন্য নজির বলে আখ্যা দিচ্ছেন তারা।

এয়ারবাস এ-থ্রি হান্ড্রেড ফিফটি বিমানটি কার্বন ফাইবারের তৈরি হওয়ায় সংঘর্ষ ও আগুন মোকাবেলা করা গেছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অগ্নিকাণ্ডের পরও বিমানটির কাঠামো ভেঙে না পড়ায় বিপুল হতাহতের হাত থেকে বেঁচে গেছেন আরোহীরা।

এসজেড/

Exit mobile version