Site icon Jamuna Television

হাসপাতালের সংস্কার কাজে ভয়াবহ দুর্নীতি, অভিযোগ নির্বাহী প্রকৌশলীর দিকে

রাজিব আহম্মেদ, ঢাকা:

মুগদা হাসপাতালের ২২টি সংস্কার কাজের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে মাত্র একটি কাজ। তবে একটিসহ বাকি ২১টিরই টাকা তুলে নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। যার পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি টাকা। এর পেছনে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ উঠেছে গণপূর্তের ইএম বিভাগ-৬ এর নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমারের বিরুদ্ধে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ এক অনুসন্ধানে দুই মাস আগে ধরা পড়ে এসব দুর্নীতি। তবে দুইমাস পেড়িয়ে গেলেও এখনও হয়নি কোনো প্রতিকার।

৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মুগদা মেডিকেলে প্রতিদিন গড়ে কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নেয়। যার মধ্যে বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের।

এই হাসপাতালের বিভিন্ন সংস্কার কাজের জন্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে গণপূর্ত ই/এম বিভাগ কর্তৃক ২২টি কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু এই ২২টি কাজের মধ্যে মাত্র ১টি কাজ ঠিকঠাক সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ২১টি কাজ না করেই অর্থ তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি নজরে আসে মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটি চিঠিতে। তাতে বলা হয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যয়নপত্রের কাগজপত্র দাখিল করলেও ২১টি কাজই করেনি। অর্থাৎ, তারা কাজ না করেই নিতে চেয়েছিলেন প্রত্যয়নপত্র।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী পবিত্র কুমারের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।


যমুনা টেলিভিশনের সবশেষ আপডেট পেতে Google News ফিড Follow করুন।

টিআইবি বলছে, হাসপাতলের সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ সত্যিই অবিশ্বাস্য। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিৎ। অভিযুক্তের পরিচয় বা অবস্থান যাই হোক না কেন। যদি এটি সম্ভব না হয় তাহলে সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, এই দায় আমার না। এই কাজের অর্থনৈতিক কোনো বিষয়ে তার যোগসূত্রও নেই বলেও জানান তিনি।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বলেন, যদি কাজ না হয় তাহলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাফলতি খুঁজে তদন্ত করে বিচারের আশ্বাসও দেন তিনি।

তবে দুই মাস পার হয়ে গেলেও নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। জানা গেছে, তরিঘড়ি করে বাকি সবগুলো কাজেই হাত দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেনি কোনোটিই। আটকে আছে অদৃশ্য কোনো বাধায়।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও এ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি ডাক্তার নুরুল ইসলাম জানান, জরুরি কিছু কাজ হয়েছে, বাকীগুলো এখনো ঝুলছে। যেটার যেই অবস্থা আমরা সেগুলোই উল্লেখ করেছি।

চিকিৎসা মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সেই চিকিৎসা সরঞ্জাম ও হাসপাতাল সংস্কার কাজে যদি এমন অভিযোগ থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার জন্য সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? আর এই ধারা চলতে থাকলে স্বাস্থ্যখাত হুমকির মুখে পড়বে বলেও শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

/এমএইচ

Exit mobile version