আগামীকাল ৭ জানুয়ারি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে ২৯৯ আসনের জন্য লড়ছে ২৮ দলের এক হাজার ৯৭৩ জন প্রার্থী। এদিকে জাতীয় নির্বাচন হলেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ভোট বর্জন করায় এই নির্বাচনকে ‘দলের চেয়ে ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির ভোট যুদ্ধ’ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সেই সমীকরণে বেশকিছু আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হারতে পারেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি বা ছোট দলের বড় নেতারা।
তবে, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কতোটা সহিংসতামুক্ত ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে তা নিয়ে রয়েছে নানা মতামত। ভোটার উপস্থিতি কেমন থাকবে তা নিয়েও রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে একদিন আগে। ৭ জানুয়ারির ভোটের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। সম্পন্ন হয়েছে চূড়ান্ত আয়োজনও।
নওগাঁ-২ স্থগিত থাকায় এবার ২৯৯ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৯৭৩ জন।
এরমধ্যে শরিক ১৪ দলসহ আওয়ামী লীগের নৌকা ২৭১, জাতীয় পার্টির ২৬৪সহ ২৮ রাজনৈতিক দলের ১ হাজার ৫৩২ প্রার্থী আছেন ভোটের মাঠে।
এর বাইরে ৪৪১ জন স্বতন্ত্রের মধ্যে আছেন ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক আর আলোচিত প্রার্থীও। যাদের টার্গেট ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ভোটার।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আসন্ন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে বলেন, যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা সেভাবে কাজ করে তাহলে ভালো নির্বাচন হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধীজোট। তাই দলীয় প্রার্থীর চেয়ে বেশকিছু আসনে এবার গুরুত্বপূর্ণ স্বতন্ত্র প্রার্থী। সেক্ষেত্রে ধরাশায়ী হতে পারেন যে কোন দলের কিছু০ হেভিওয়েট প্রার্থীরাও।
এ বিষয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলছেন এই নির্বাচন হচ্ছে স্বতন্ত্রলীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যে। বিরোধীদল নির্ধারণের জন্য এই নির্বাচন হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, একটা দলে অনেক প্রার্থী থাকতে পারে। তাদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেবার একটা সুযোগ থাকবে এবার।
অন্যদিকে, আগামীকালের ভোটে চোখ রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব। ইতোমধ্যে নির্বাচনে পর্যবেক্ষকও পাঠিয়েছে তারা। তাই ভোটার উপস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের ওপর ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করছে বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, এবারের নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবেই। কারণ এবার অনেক পক্ষ আছে, স্বতন্ত্র আছে। তারাই ভোটের দিকে নিয়ে আসবেন ভোটারদের।
তবে এতে দ্বিমত পোষণ করেছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, আসল প্রতিদ্বন্দ্বী দলই তো নির্বাচনে নাই। তাই ভোটারদের অংশগ্রহণ কম থাকবে।
আরও পড়ুন: কেন এবার ভোট হচ্ছে ২৯৯ আসনে?
এদিকে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা, সহিংসতা প্রতিরোধ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মাঠে থাকবে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে সেনাবাহিনী।
২০১৪ কিংবা ১৮ সালের নির্বাচনের সঙ্গে পার্থক্য থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদে কোন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে তা ধারনা করা কঠিন নয়। তবে বিরোধীদল কারা হবে, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোট নাকি জাতিয় পার্টি-সেই অপেক্ষাই হতে পারে এবারের নির্বাচনের চমক।
/এমএইচ

