Site icon Jamuna Television

কেন এবারের জাতীয় নির্বাচন অন্যবারের চেয়ে ভিন্ন?

আহমেদ রেজা:

এবারের জাতীয় নির্বাচন আগের কয়েকটির চেয়ে আলাদা। বিভিন্ন দিক থেকে নতুনত্ব এসেছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে। ২০০৮ সালে ভোট হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। ২০১৪ সালে ভোটের আগেই নির্বাচিত হয়ে গিয়েছিলেন অনেকে। ২০১৮ সালে বিএনপিসহ বিরোধীরা অংশ নিলেও অভিযোগ ওঠে কারচুপির। তবে এবারের নির্বাচন গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে বেশ ভিন্ন।

পাঁচ বছর পর ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন ৩০০ জন সংসদ সদস্য। বিজয়ী দল বা জোট গঠন করবে সরকার। এই সাংবিধানিক নিয়মে ভোট হচ্ছে আজ রোববার (৭ জানুয়ারি)। শুরু থেকেই নির্বাচন ঘিরে ছিল শঙ্কা-সন্দেহ। তবে সব ছাপিয়ে এল ভোটের দিন।

অংশগ্রহণ নেয়নি বিএনপি:

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকেই দলীয় সরকারের অধীনে ভোটে না যাওয়ার কথা বলে এসেছে বিএনপি। তাদের আন্দোলন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হতে হবে ভোট। শেষ পর্যন্ত দাবি পূরণ না হওয়ায় ভোটে অংশ নেয়নি দলটি। এখন ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে কর্মসূচি পালন করছে দলটি।

আওয়ামী প্রার্থী-স্বতন্ত্র লড়াই:

নির্বাচনে বিএনপি না এলেও কমতি নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার। ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৫টিতে লড়ছেন সরাসরি আওয়ামী লীগের মনোনীতরা। ১৪ দলের শরিকদের কয়েকজনকেও দেয়া হয়েছে নৌকা প্রতীক। আর নীরব সমঝোতা হিসেবে জাতীয় পার্টির ২৬টি আসনে লাঙ্গলের বিপক্ষে নেই ক্ষমতাসীনদের নৌকা। ব্যতিক্রমটা হচ্ছে, এবার যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি কিন্তু এলাকায় দলীয় নেতা হিসেবে পরিচিত, তারা অনেকেই ভোটে লড়ছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। মূলত এই স্বতন্ত্ররাই জমিয়ে তুলেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা।

প্রতীক বরাদ্দ:

সংসদ নির্বাচনে বহুদিনের পরিচিত নৌকা-ধানের শীষ বা নৌকা-লাঙ্গল প্রতীকের লড়াইয়ে এবার ছেদ পড়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস তৈরি করেছেন, তাদের কারও প্রতীক ঈগল, কারও ট্রাক, কারও কেটলি বা কাঁচি। তারা কোনো ক্ষেত্রে নৌকার বিপক্ষে, কোনো ক্ষেত্রে লাঙ্গল বা অন্য প্রতীকের বিপক্ষে শক্ত প্রতিরোধ গড়বেন বলে ধারণা সচেতন নাগরিকদের।

আন্তর্জাতিক ইস্যু:

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বরাবরই আগ্রহ বিদেশিদের। এবার তফসিলের আগেই সুষ্ঠু ভোটে প্রতিবন্ধকতার শঙ্কা থেকে ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তৎপরতা দেখা গেছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের আবহে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডকে রীতিমতো অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের ছন্দে চলেনি চীন ও ভারত।

সব মিলিয়ে কীভাবে শেষ হয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন, সেদিকে তাকিয়ে সবাই। নানামুখী ষড়যন্ত্রের কথাও বারবার এসেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মুখে।

এসজেড/

Exit mobile version