Site icon Jamuna Television

বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

তাওহীদ মিথুন:

ঐতিহাসিক ১০ জানুয়ারি আজ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি বিজয় অর্জনের পর; স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন। তার দেশে ফেরার মধ্য দিয়েই পূর্ণতা পায় বাঙালির মুক্তির আন্দোলন ‘মুক্তিযুদ্ধ’। স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবে পা রাখেন মুক্তির মহানায়ক।

পাকিস্তানের শাসন-শোষণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। এ জন্য জীবনের একটা বড় সময় শেখ মুজিবকে বার বার জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়। পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তার দীপ্তিময় নেতৃত্বে তিনি হয়ে ওঠেন অবিসংবাদিত নেতা; ভূষিত হন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে বর্বর হানাদার বাহিনীর গণহত্যা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু তার ধানমন্ডির বাসভবন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এর পরপরই গ্রেফতার হন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে।

দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রেখে নির্যাতন চালানো হয়। হত্যার পরিকল্পনা থেকে তাকে ফাঁসির মঞ্চেও নেয়া হয়। কিন্তু দেশে-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা ও তার অদম্য সাহসের কাছে শেষ পর্যন্ত হার মানে পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠী।

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়। স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায়, বাঙালির অর্জিত বিজয় যেন পূর্ণতা পাচ্ছিলো না। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে বিজয়ী বাঙালি থাকে প্রিয় নেতার ফেরার অপেক্ষায়।

বাঙালির পাশাপাশি বিশ্বের নানা দেশে স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী মানুষও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠে। আন্তর্জাতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করে অবশেষে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু সোজা লন্ডন চলে যান। সেখান থেকে ভারত হয়ে ১০ জানুয়ারি ফেরেন স্বদেশে।

বঙ্গবন্ধুর ফেরার দিন সারা দেশ থেকে মানুষ ছুটে আসে তাদের নেতাকে একবার দেখার জন্য। স্বাধীন দেশে ভালবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধু। বিমানবন্দর থেকে লাখ লাখ জনতার জনসমুদ্র পাড়ি দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিব তার বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘বাঙালি আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, সেই বাঙালির জন্য আমি রক্ত দিতেও প্রস্তুত’।

এর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার পরাজিত শত্রু ও দেশি-বিদেশি চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঘাতকের হাতে স্বপরিবারে জীবন দেন বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান।

\এআই/

Exit mobile version