Site icon Jamuna Television

এক অসামান্য ‘সামন্ত’র গল্প

আগুনে পোড়া মানুষের চিকিৎসা ব্যয়বহুল অনেক। কতটা যন্ত্রণা পোহাতে হয় দগ্ধকে, তা কেবল আক্রান্ত ব্যক্তিই জানেন। আর হয়ত অনুধাবন করেন ডা. সামন্ত লাল সেন। এমন অনেক কথা বহু বছর ধরেই মানুষের মুখে মুখে ফেরে। একজন সামন্ত লাল ব্যক্তি-পেশা ছাড়িয়ে তার কাজের মাধ্যমে নিজেই হয়ে উঠেছেন একটি প্রতিষ্ঠান। সেই ব্যক্তিটি এবার মন্ত্রিসভায় জায়গা করে নিয়েছেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।

ডা. সামন্ত লালের জন্ম ১৯৪৯ সালের নভেম্বরে তৎকালীন সিলেট (বর্তমান হবিগঞ্জের বানিয়াচং) নাওড়া গ্রামে। সামন্ত লাল সেনরা ছিলেন ৫ ভাই-বোন। তার বাবা জিতেন্দ্র লাল সেন পেশায় ছিলেন একজন সরকারি চাকরিজীবী।

১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন সামন্ত লাল সেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সার্জারিতে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা ছাড়াও ডিগ্রি নিয়েছেন জার্মানি ও ইংল্যান্ড থেকে।

ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম বার্ন বিভাগ চালু হয়। সামন্ত লাল সেন সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠা এবং পরে চানখারপুলে ৫০০ শয্যার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যেকোনো জাতীয় দুর্যোগ বিশেষ করে অগ্নিকাণ্ড কিংবা এসিড দগ্ধের ঘটনায় তিনি সবসময় রোগীদের শয্যাপাশে ছুটে গেছেন। একজন মানবিক চিকিৎসক হিসেবেও সবসময় পরিচিত ছিলেন সবার কাছে। রাজধানীর পুরান ঢাকার নিমতলী কিংবা চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সবসময় তাকে রোগীদের পাশে দেখা গেছে।

চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক এবং পরে সারাদেশে বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠার কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব প্রদান দেন।

চিকিৎসাসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেয় বাংলা একাডেমি। ডা. সামন্ত লাল সেন বাংলাদেশ প্লাস্টিক সার্জন সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

এই সামন্ত লালের কাঁধে এবার দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর দায়িত্ব। অনেক অনিয়ম-অভিযোগের মাঝেও তাই এবার নতুন আলোর দিশা। কারণ মন্ত্রণালয় যে এবার পেয়েছে একজন সামন্ত লালকে।

/এমএমএইচ

Exit mobile version