Site icon Jamuna Television

চালচুলোহীন অসহায় পরিবারের ঝুপড়ি ঘরে বসবাস, অবশেষে মিলছে ঘর

রইসুল ইমন, বাউফল (পটুয়াখালী):

শীতের দাপটে জবুথুবু সারাদেশ। খোলা আকাশের নিচেই অনেকে লড়ে যাচ্ছেন হাড় কাঁপানো শীতের সঙ্গে। পেটের খাবার জোটে না অনেকের। ফলে শীত নিবারণের জন্য বাড়তি গরম কাপড় কেনাও তাদের জন্য বিলাসিতা। এমনই একটি পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে পটুয়াখালীর বাউফলে। নেই কোনো জমি, নেই মাথা গোঁজার ঠাই। তাই, পরিবার নিয়ে থাকছেন একটি ঝুপড়ি ঘরে। আগুন আর ছেঁড়া কম্বলের বদৌলতে সেখানেই পার করে দিচ্ছেন তীব্র শীতের এই মৌসুম।

এক সন্তানসহ দিনমজুর মোশাররফ হোসেন ও শিরিন বেগম দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই তীব্র শীতে কোনোমতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন এই ঝুপড়ি ঘরে। তবে সরেজমিন দেখা যায়, দিনমজুর মোশারফ হোসেন নানা রোগে আক্রান্ত। ফলে যেতে পারেন না কাজে। সংসারের দায়িত্ব এখন তার স্ত্রী শিরিনের কাঁধে। যিনি এখন অন্যের বাসায় কাজ করে কোনোমতে চালিয়ে নিচ্ছেন সংসার।

জানা গেছে, স্থানীয়দের মাধ্যমে এই দম্পতি জেনেছিলেন মুজিব বর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্প সম্পর্কে। আবেদনও করেছিলেন একাধিকবার। তবে, অনেকবার মুজিব বর্ষের সেই ঘরের জন্য আবেদন করেও তালিকায় নাম ওঠেনি এই পরিবারটির।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে উপজেলা প্রশাসন। যমুনা টেলিভিশনকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়, পরিবারটির জন্য মুজিব বর্ষের একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিবারটি অত্যন্ত অসহায়। অর্থের অভাবে লেখাপড়া করাতে পারছে না তাদের একমাত্র সন্তান। স্থানীয়রা বলেন, এমন পরিবারের জন্য সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করা উচিত।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য শিরিন বেগমের সাথে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। শিরিন বলেন, এই শীতের মধ্যে অনেক কষ্ট হয়। আমাদের মুখের দিক তাকিয়ে হলেও যেন একটা ঘর আমাদেরকে দেয়া হয়। এর আগে দুইবার আবেদন করেছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মাথা গোঁজার জায়গা নাই। অন্যদিকে সন্তান বড় হচ্ছে, তাকেও পড়ালেখা করাতে পারছি না।

পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবির বলেন, মোশারফ-শিরিন দম্পতি অত্যন্ত অসহায়। ওরা সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য। আশা করি ওদেরকে বিবেচনা করবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি)। তারা ভালো মানুষ, তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। আশা করি মোশারফের বিষয়টাও দেখবে।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির গাজী নয়া বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও’র মাধ্যমে জানতে পারি, পরিবারটি জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছে। পরবর্তীতে আজকে সকালে বাউফল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিবারটির জন্য আমাদের মুজিব বর্ষের যে ঘর করা হয়েছে তার একটি বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী রোববার তারা ঘরে উঠতে পারবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

এমএইচ/এটিএম/

Exit mobile version