
রাজধানীর সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের জমা দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এসময় আদালত বলেন, আয়ানের মৃত্যুর তদন্ত রিপোর্টে করা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশগুলো হাস্যকর। এটা একপ্রকার আইওয়াশ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রিট শুনানিতে হাইকোর্ট এই মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি আদেশ দেয়া হবে বলে জানানো হয়। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানির সময় উচ্চ আদালত আরও বলেন, প্রতিবেদন পড়ে মনে হচ্ছে, রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।
এর আগে, রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকালে সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। সংস্থাটির মহাপরিচালকের পক্ষে উপ-পরিচালক ডা. পরিমল কুমার পাল এই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়ানের অস্ত্রোপচারের সময় স্বাভাবিক রক্তপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ’চাইল্ডহুড অ্যাজমা’ সমস্যায় ভুগছিল শিশুটি। শ্বাসকষ্টের জন্য তাকে মাঝে মাঝে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেয়ার প্রয়োজন হতো। সুন্নতে খতনার অস্ত্রোপচারের আগে ওয়েটিং রুমে শিশুটিকে নেবুলাইজার ও ইনহেলার দেয়া হয়েছিল। তবে এ বিষয়টি চিকিৎসকদের জানানো হয়নি বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
শিশু আয়ানের এমন মৃত্যুর জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী করা হয়নি প্রতিবেদনে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের মৃত্যু এড়াতে চার দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সুপারিশগুলো হলো–
· হাসপাতালে একাধিক অ্যানেস্থেশিওলজিস্ট নিয়োগ দেয়া
· রোগী ও রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে অ্যানেস্থেশিয়া ও অপারেশনের ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে অবহিত করা
· হাসপাতালে আইসিইউর ব্যবস্থা রাখা
· সরকারের অনুমোদনের পর কোনো হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা
আরও পড়ুন: কী ঘটেছিল শিশু আয়ানের সঙ্গে?
উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর শিশু আয়ানকে ফুল অ্যানেস্থেশিয়া দিয়ে খতনা করায় সাতারকুলের ওই হাসপাতাল। অপারেশনের কয়েক ঘণ্টা পরও জ্ঞান না ফেরায় তাকে গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে সাতদিন লাইফ সাপোর্টে রাখার পর গত ৭ জানুয়ারি তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
/এএম



Leave a reply