Site icon Jamuna Television

সিলেটকে ৭৭ রানে হারিয়ে শীর্ষে রংপুর

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭৭ রানে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানে উঠলো রংপুর রাইডার্স। আগে ব্যাট করতে নেমে বাবর আজম ও নুরুল ইসলাম সোহানের চল্লিশোর্ধ ইনিংসের ওপর ভর করে ১৬২ রানের লড়াকু পুঁজি পায় রংপুর। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শেখ মাহেদী, মোহাম্মদ নবি ও সাকিব আল হাসানের স্পিন ঘূর্ণিতে ১৯ বল বাকী থাকতেই মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট স্ট্রাইকার্স।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিথুন। আগে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৭ রানেই প্রথম উইকেট হারায় রংপু। ১ রান করা ব্রেন্ডন কিংকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান সামিত প্যাটেল। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে অবশ্য ফজলে রাব্বিকে নিয়ে ৫১ রানের জুটি গড়েন বাবর আজম। তাতে অবশ্য বাবরের অবদান বেশি।  

নবম ওভারে এসে ২১ বলে ১৪ রান করা রাব্বিকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সিলেটের আইরিশ রিক্রুট হ্যারি টেক্টর। এর ঠিক পরের বলে এলবডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব আল হাসানকে। আম্পায়ার আউট দেয়ার পর বাবরের সঙ্গে আলাপ করে রিভিউ নিতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বাবর আগ্রহ না দেখানোয় সোজা ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটতে শুরু করেন রানের খাতা খুলতে না পারা বাঁহাতি এই ব্যাটার। যদিও পরবর্তীতে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বলের ইম্প্যাক্ট ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে। অর্থাৎ রিভিউ নিলেই বেঁচে যেতে গোল্ডেন ডাক মারা সাকিব।

এরপর সোহানের সঙ্গে ৩০ রানের জুটি গড়ে বাবর বিদায় নেন ফিফটির আগেই। ৩৭ বলে ৭ চারে সামিতের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ৪৭ রানে থামেন এই পাকিস্তানি ব্যাটার। এরপর ক্রিজে এসে ১৪ বলে ২২ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। তবে আফগান এই অলরাউন্ডারকে ফিরিয়ে বিপদ মুক্ত করার চেষ্টা করেন আরিফুল হক। এরপর আগ্রাসী ব্যাট চালাতে থাকেন সোহান। ১৯তম ওভারে রেজাউর রহমান রাজার বলে আউট হলেও ততক্ষণে দলকে এনে দেন লড়াই করার মতো সামর্থ্য। ৩০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৬ রানে আউট হন রংপুরের অধিনায়ক। শেষ দিকে অবশ্য খুব বেশি রান তুলতে পারেননি মোহাম্মদ নবি ও শামীম। তাতে ১৬২ রানে থামে রংপুর।  সিলেটের হয়ে টেক্টর ও সামিত দু’জনেরই শিকার দুটি করে উইকেট। এছাড়া একটি করে নেন রিচার্ড এনগারাভা, আরিফুল হক ও রাজা।

১৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা প্রথম ওভারেই বোল্ড হন সিলেটের ওপেনার হ্যারি টেক্টর। পরের ওভারে শেখ মাহেদী হাসান এসে প্রথম ডেলিভারিতেই তুলে নেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট। ৩ বল খেলা শান্ত ১ রানের বেশি করতে পারেননি।

মাহেদী নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে দেখা পেয়ে যান দ্বিতীয় শিকারের। ৪ রানে থাকা জাকির হাসানকে স্টাম্পড করে ফেরান নুরুল হাসান সোহান। পাওয়ারপ্লে’র শেষ ওভারে বল হাতে সাকিব আল হাসানের আগমন। সাকিবের প্রথম পাঁচ বলে একটি রানও করতে পারেননি সিলেটের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন। ধুঁকতে থাকা মিঠুন মিড অনে ক্যাচ হন ব্রেন্ডন কিংয়ের হাতে। ৮ বল খেলা মিঠুনের সংগ্রহে কেবল ১ রান।

উইকেট মেডেনে অবশেষে চলতি বিপিএল রাঙান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। সিলেট স্ট্রাইকার্স পাওয়ারপ্লে শেষ করে ৪ উইকেট খুঁইয়ে ২৩ রানে। যা এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত পাওয়ারপ্লে’তে সর্বনিম্ন। সাকিব নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসেও বল হাতে জাদু দেখান। এবার অবশ্য ১ রান খরচ করে দখলে নেন ১ উইকেট। থিতু হয়ে যাওয়া সামিত প্যাটেলকে ক্যাচ বানান পয়েন্ট অঞ্চলে ফজলে মাহমুদের হাতে। ২-১-১-২, সাকিবের এই বোলিং ফিগার রীতিমতো চোখ ধাঁধানো।

এরপরও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সিলেট। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে তারা। শামসুর ও আরিফুল ফিরলে দলের রান পঞ্চাশ হওয়ার আগেই ৭ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। তবে দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন রায়ান বার্ল। যদিও জিম্বাবুয়ের এই ব্যাটারের ৪৩ রানের ইনিংস সিলেটকে জেতাতে পারেননি। বার্লের সঙ্গে রিচার্ড এনগারাভাকে ফিরিয়ে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন নবি। রংপুরের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন শেখ মাহেদী ও মোহাম্মদ নবি। এছাড়াও ২টি উইকেট পান সাকিব আল হাসান। ১টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই।

/আরআইএম

Exit mobile version