Site icon Jamuna Television

উচ্চতাকে উপভোগ করাই নেশা যার, মরণোত্তর দেহদান করেছেন যিনি

সিনেমা নয়, নয় কোনো আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের কারসাজি। পুরোটাই বাস্তব। বলছি রাজধানী ধানমন্ডির বাসিন্দা জাকিয়া রায়হানা রূপার সাহসিকতার কথা। উচ্চতাকে উপভোগ করাই যার একমাত্র নেশা। কখনও সুউচ্চ ভবনের ছাদে পা দুলিয়ে বসেন, তো কখনও গাড়ির ছাদে বসে পাহাড়ে ঘুরে বেড়ান। আবার কখনো স্কাই ডাইভিং উপভোগ করেন এই নারী। তবে কি ভাইরাল হতেই তার এই কর্মকাণ্ড? যমুনা নিউজকে জানালেন তার ভালো লাগার কথা।

এ যেন পাখির চোখে পৃথিবী দেখা। নিজেকে ভিন্নভাবে আবিষ্কার করা। চারপাশের ময়লা আবর্জনা আর জটিলতাকে দূরে ঠেলে যেন অন্য এক জগত খুঁজে পেয়েছেন রূপা।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব ছোট থেকেই অনেক উঁচুতে গিয়ে বসে থাকতে আমার ভালো লাগতো। সেই ধারাবাহিকতা ৪৪ বছর ধরে চলছে। একদমই ভয় লাগে না বরং উপভোগ করি। সাবধানে করি যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে।

এত কিছু থাকতে কেন এমন ঝুঁকিপূর্ণ নেশা? কেনই বা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ছড়ালেন? নেটিজেন ও স্বজনদের প্রতিক্রিয়াই বা কী? এসবের উত্তর মিললো তার কথায়।

রূপা বলেন, ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিলো না। আমার ফেইসবুক প্রোফাইলে এমন ভিডিও আরও অনেক আছে। স্বজনরা আমার এই ভালো লাগাকে সম্মান দেয়। অন্যেরা কে কী বলল তা আমি কখনো গায়ে মাখি না।

ভালো লাগা আর দীর্ঘদিনের অনুশীলনে রূপা এখন অনেক পরিণত। ভয় যেখানে অন্যদের জন্য সীমানার দেয়াল টানে সেখানেই শুরু করতে চান এই নারী। তবে অন্যদের জন্যও রয়েছে তার পরামর্শ।

যে মানুষ সাঁতার জানে না সে যেমন সাঁতরে পুকুর বা নদী পার হতে পারবে না, তেমনি যার হাইট ফোবিয়া আছে সে উঁচু থেকে নিচে তাকাতে পারে না। তার ব্রেইন তাকে সেই কমান্ড কখনও দিবে না। তাই আমাকে অনুসরণ করে কেউ ঝুঁকিপূর্ণ এই কাজ করতে গেলে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকবে। আমি বলবো সুন্দর কিছু উপভোগ করতে শিখেন, না পারলে এড়িয়ে যান।

উচ্চতাকে দারুণভাবে উপভোগ করেন রুপা। দেশের বাইরে গেলেও উচ্চতার সাথেই সখ্যতা গড়ে তুলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আপাতত আরও উঁচু কোনো ভবনের ছাদে বসার পরিকল্পনা নেই। ইচ্ছে হলে, ভালো লাগলে করবো। যা সব সময়ই করি। যখনই দেশের বাইরে যাই প্রথমেই খুঁজে নেই ঐ দেশের উচু ভবন, পাহাড় কিংবা অন্য কিছু।

উচ্চতাকে যিনি ভালোবেসে ফেলেছেন তার হৃদয়তো ছোট হওয়ার নয়। মরণোত্তর দেহদান ও চক্ষুদানও করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমার কোনো সম্পদ নেই। খুলিনি ব্যাংক একাউন্ট, নেই জমি কিংবা স্বর্ণ। দেহটাই আমার একমাত্র সম্পদ। যা আমি মেডিকেল শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য দান করেছি।

দুঃসাহসিক এমন অভিযানে মানসিক প্রভাব পড়ে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে রূপা আরও বেশি সাবলিল।

তিনি বলেন, আমি, সেক্স এডুকেশন,মেন্টাল হেলথ ও প্যারেন্টিং নিয়ে কাজ ও পড়াশোনা করি। ফেইসবুকেও এই বিষয়ে আমার অনেক পোস্ট রয়েছে। মানুষ যদি এগুলো পড়েন তাহলে উপকৃত হবেন। যদিও রুপার এমন কর্মকানণ্ডে নেটিজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

এটিএম/

Exit mobile version