Site icon Jamuna Television

ইট-পাথরের শহরে বুক ভরে শ্বাস নেয়া যায় যেখানে

তাজনুর ইসলাম:

দূষণের নগরী ঢাকায় এখনও এমন জায়গা আছে, যেখানে মানুষ বুক ভরে একটু শ্বাস নিতে পারে। বোটানিক্যাল গার্ডেন সেগুলোর একটি। হাসি-আনন্দ-আড্ডা কিংবা ঘুরে বেড়ানোর এক প্রিয় স্থান এই বোটানিক্যাল গার্ডেন। কারও কাছে ছোটবেলার সুখস্মৃতি। যা এখনও আগের মতোই ভালোবাসার আবেশে জড়িয়ে থাকা এক নাম। শীতের মিষ্টি দুপুরে এমন কয়েকটি পরিবারের সাথে দেখা মিললো জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে।

এক দর্শনার্থী বলেন, এখানে কোনো ধুলাবালি নেই। কোনো জ্যাম নেই। অক্সিজেন পাওয়া যাবে। উদ্যানে ঘুরতে আসা আরেকজন বলেন, আগে যেরকম আতঙ্ক কাজ করতো, এখন চিত্র পালটে গেছে। এখানে এসে ভালো লাগে।

ভোর থেকে সন্ধ্যা অব্দি নানা বয়সী দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর উদ্যান। এই উদ্যান ঘিরেই বহু স্বপ্নের রোদ ওঠে। আবার দৃঢ় হয় বন্ধুত্বের বন্ধন। দিনভর আড্ডা-গানে মাতে তরুণ প্রজন্ম। একজন বলেন, যেখানে থাকি, যানজট আর কোলাহলের কারণে সেখানে স্বস্তি পাই না। এখানে খোলামেলা জায়গা আছে, স্বস্তি পাই আসতে। আরেকজন বলেন, মন ভালো থাকে এখানে আসলে। প্রকৃতি সরাসরি দেখি, যার ফলে পড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ে।

অন্ধকার ভেদ করে যখন ভোরের সূর্য উঁকি দেয়, তখন উদ্যানও যেন প্রাণ ফিরে পায়। প্রকৃতির সান্নিধ্যে শুরু হয় নানা বয়সী মানুষের সুস্থ থাকার প্রচেষ্টা। কেউ হাঁটছেন, কেউ দৌড়াচ্ছেন আবার কেউ হয়তো ব্যস্ত শরীরচর্চায়। শরীরের পাশাপাশি পাখির কলতান মিটায় মনের ক্ষুধাও।

একজন বলেন, আমরা অনেক সৌভাগ্যবান, বাসার কাছে এরকম একটা জায়গা আছে। যেখানে খোলা বাগান, সবুজ বৃক্ষ রয়েছে। আরেক তরুণী বলেন, সকাল বেলার বোটানিক্যাল গার্ডেন মানে স্বাস্থ্য সচেতনতা। বিশেষ করে দৌড়বিদ মানেই এখন বোটানিক্যাল গার্ডেন, নিঃসন্দেহে এটা বলা চলে।

জানালেন তারা, বহু বছর ধরে নিয়ম করে উদ্যানে আসা-যাওয়ায় একেকজন হয়ে উঠেছেন আত্মার আত্মীয়। তারা বলেন, আগে অনেককেই চিনতাম না। এখন অনেককেই চেনা। অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে বন্ধন তৈরি হয়েছে। সকালে হাঁটার জন্য বাংলাদেশে বোটানিক্যাল গার্ডেনের কোনো বিকল্প নেই। চমৎকার জায়গা এটা।

বোটানিক্যাল গার্ডেনকে আরও সুন্দর আর সবার জন্য নিরাপদ রাখার প্রচেষ্টার কথা জানান গার্ডেনের পরিচালক। জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক মাহমুদা রোকসেনা সুলতানা বলেন, সময় মেইনটেন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতে চাই। যাতে কোনো প্রকার সমস্যায় কেউ না পড়ে। সবসময় আমার আপ্রাণ চেস্টা থাকে এটাই।

উদ্ভিদ সংক্রান্ত জ্ঞান অন্বেষণে বোটানিক্যাল গার্ডেনে ভ্রমনের আহ্বানও উদ্যান কর্তৃপক্ষের।

/এএম

Exit mobile version