Site icon Jamuna Television

বেড়েই চলছে ওষুধের দাম

রাসেল আহমেদ:

নিত্যপণ্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ওষুধের দাম। বাঁচতে হলে যাদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয় তাদের এখন হাঁসফাঁস অবস্থা। যেমন ধরা যাক, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীর কথা। এদের বেশিরভাগেরই ওষুধ সেবন করতে হয় নিয়মিত। আর তাই প্রেসারের ওষুধের দাম বাড়লে পকেটে আঘাত লাগে এসব মানুষের। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, দেশে প্রতি চারজনে একজন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত।

উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বিসোপ্রোলল ফিউমারেট ট্যাবলেটের দাম কয়েক মাস আগে ছিল ৬ টাকা। এখন প্রতি পিস ব্রিক্রি হচ্ছে ৮ টাকায়। এমলোডিপাইন শ্রেণির বড়িপ্রতি মূল্য ১৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা। ধরন ও কোম্পানিভেদে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে ওষুধের দাম।

ওষুধের দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে বলা হচ্ছে, ডলার সঙ্কট ও আমদানি খরচ বৃদ্ধি। যদিও অভিযোগ আছে, মূল্য সমন্বয়ে কোম্পানির চাওয়ার প্রাধান্য থাকে বেশি। মানুষের ক্রয় সক্ষমতাকেও বিবেচনায় রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. বে নজির আহমেদ বলেন, মূল্য বাড়ানোর ক্ষেত্রে মানুষের দিকটা দেখার কথা নিয়ন্ত্রকদের। আমাদের সে জায়গাটা নেই। আমাদের যে শিল্প সংগঠন আছে, তারা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। তারা যেভাবে প্রস্তাব দেয়, এর বাইরে যাওয়ার ক্ষমতার দেখি না আমাদের ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের।

স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, প্রচুর ওষুধ কোম্পানি হওয়ায় তারা নিজেদের ওষুধের প্রচার করতে অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে। তাই কোম্পানিগুলোর পছন্দের তালিকায় চিকিৎসকসহ কিছু বিষয় জড়িত আছে।

দেশে মোট ৩০৮টি কোম্পানি ২৭ হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ডের ওষুধ উৎপাদন করে। এরমধ্যে কেবল ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারন করে ঔষধ প্রসাশন অধিদফতর। সেখানেও অভিযোগ কোম্পানিগুলো নির্ধারিত জেনেরিকের সাথে নতুন কিছু সংযোজন করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যান।

অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ওষুধের নির্ধারিত জেনেরিকের সাথে নতুন কিছু সংযোজন করে কোম্পানিগুলো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সরকার যদি নির্ধারিত ফর্মূলার ভিত্তিতে দর নির্ধারণ করতে পারে, তাহলে শৃঙ্খলা আসবে।

অধ্যাপক ডা. বে নজির আহমেদ বলেন, যৌক্তিকতার বাইরে চলে গেছে ওষুধের দাম। এর কারণে অনেকে ঠিকমতো ওষুধ কিনতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ছে রোগ নিরাময়ে।

উল্লেখ্য, শৃঙ্খলা ফেরাতে গত বছর নতুন আইন পাস হয়। কিন্তু তাতেও সব ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা রাখা নেই তদারকি কর্তৃপক্ষের।

/এমএন

Exit mobile version