Site icon Jamuna Television

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় অভ্যন্তরীণ সাজসজ্জায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

শামীম রেজা:

বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দৃষ্টিনন্দন করতে ছোট-বড় সব ভবনেই ইন্টেরিয়র ডিজাইন করা হয়। এতে কৃত্রিম নানা উপকরণ ব্যবহার করা হয়। যা অতিমাত্রায় দাহ্য। সেইসাথে নিম্নমানের পণ্য ব্যবহারে জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে কয়েকগুণ।

স্থপতি ও ভবনের অভ্যন্তরীণ নকশা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেবল সৌন্দর্য নয়, নিরাপত্তার বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরও নতুন করে ভাবতে হবে।

মূলত, রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর একটি প্রশ্নই সামনে আসছে, তা হলো আধুনিক ভবনে কেন এতো মানুষের প্রাণহানি? কেন আগুন এতো দ্রুত ছড়িয়ে পড়লো পুরো ভবনে? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে যমুনা টেলিভিশন।

গ্রিন কোজি কটেজের পুরো ভবনটিই ছিল কাঁচে ঘেরা। ভবনের ভেতরের রেস্তোরাঁ, অফিস, শোরুমে দৃষ্টিনন্দন ইন্টেরিয়র ডিজাইন করা হয়েছিল। এর ফলেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং কালো ধোঁয়া তৈরি হয়। এতেই অধিকাংশ মানুষ শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যায়।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন এন্ড মেইনটেইন্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আগুনের মাত্রা প্রথম স্তর থেকে দ্বিতীয় স্তরে আসতে যদি ১০ মিনিট লাগে, ইন্টেরিয়র ডিজাইনে ব্যবহৃত উপাদানের ফলে তা ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে হয়।

ইন্টেরিয়র ডিজাইনার রাশনা শারমিন জানান, ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় থাকলেও অনেক সময় বাজেট স্বল্পতার কারণে তা মানা যায় না। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সস্তা পণ্য ব্যবহার করা হয়। এসব অতিমাত্রার দাহ্য পদার্থই ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থাও থাকে না।

তিনি আরও বলেন, রেস্তোরাঁ, অফিস বা শোরুমে সৌন্দর্যবর্ধনের একটি বিষয় থাকে। সেক্ষেত্রে কাঠ ও মেটালের মিশ্রণ ব্যবহার করা যায়। তাহলে এটি আগুনকে দ্রুত ছড়াতে সাহায্য করবে না। আগুন লাগলে এটি কিছুক্ষেত্রে প্রশমিত করবে।

এ নিয়ে স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর বলেন, লোক দেখানো সৌন্দর্য তৈরি করতে গিয়ে জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি বাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে যদি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ব্যবহার করা যায়, তাহলে অফিস-রেস্তোরাঁগুলো আরও আকর্ষণীয় করা সম্ভব। বর্তমানে ইন্টেরিয়র ডিজাইন নয়, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন হয়। তার মানে মানুষকে দেখানোর জন্য এগুলো করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ভুল-ভ্রান্তিগুলো কীভাবে সামাল দেয়া যায়, এখন সেদিকে নজর দিতে হবে। আর যাতে এ রকম দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর তাগিদও দেন তিনি।

/আরএইচ/এমএন

Exit mobile version