Site icon Jamuna Television

চারদিনের সন্তানসহ ক্লিনিকের ছাদ থেকে লাফিয়ে মায়ের আত্মহত্যা, ভিডিও ভাইরাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

মায়ের কোল হলো তার সন্তানের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। নিজের সবটুকু দিয়ে একজন মা তার সন্তানকে লালন-পালন করেন। তবে সেই মা ই যখন সন্তানের মৃত্যুর কারণ হয় তখন অনেক প্রশ্ন উকি দেয় সবার মনে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে শুক্রবার। মাত্র চারদিন বয়সী নিজের সন্তানকে পাঁচতলা একটি বেসরকারি ক্লিনিকের ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন তার মা সীমা আক্তার। পরে সীমা নিজেও ছাদ থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।

সীমা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের ফুলচং গ্রামের মনির মিয়ার স্ত্রী। মনির লেবানন প্রবাসী, গত এক বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের দু’জনের বিয়ে হয়।
মা-সন্তানের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। সীমার এমন পাষেণ্ডর মতো আচরণের কারণ এখন খুঁজছে পুলিশও। তাদের ধারণা স্বামীর উপর সীমার অভিমান এ ঘটনার মূল কারণ হতে পারে।

পুলিশ বেশ কয়েকটি তথ্য ও উপাত্ত ও সংগ্রহ করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তারা বলেত চান সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা।

এদিকে ঘটনার পর ফেসবুকে সীমার শিশু সন্তানের একটি ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে হাসপাতালের সামনের সড়কে পড়ে আছে অবুঝ শিশুটির নিথর দেহ। প্রাণহীন ওই শিশুর দেহ ঘিরে উৎসুক জনতা। আর ২০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ক্লিনিকের ছাদ থেকে লাফ দিচ্ছেন মা। নিচে মানুষজন অসহায়ের মতো তাকিয়ে দেখছেন সেই দৃশ্য।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, শিশুর ছবিটি দেখে আমরাও মর্মাহত। এই বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত পর জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা।

তবে ধারণা করা হচ্ছে স্বামীর সাথে অভিমান করেই সীমা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছে না পুলিশ। সীমার মা রেহানা বেগমও এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছে না।

এর আগে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পৌরশহরের পুরাতন জেল রোডস্থ দি ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও স্পেশালাইজ্ড হাসপাতালের ছাদ থেকে নিজের শিশু সন্তানকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন সীমা। পরে তিনি নিজেও লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন। গত ১৬ অক্টোবর প্রসব বেদনা নিয়ে ল্যাব এইড হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী লাইফ কেয়ার শিশু ও জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। এদিন রাতেই সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন সীমা। শুক্রবার সকালে সীমা ও তার সন্তানের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার কথা ছিল।

Exit mobile version