Site icon Jamuna Television

চুয়াডাঙ্গায় জোড়া খুনের দায়ে ৩ জনের ফাঁসি

চুয়াডাঙ্গা করেসপনডেন্ট:

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় বৃদ্ধ দম্পতিকে হত্যার দায়ে তিন জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের বিচারক মো. মাসুদ আলী।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, আলমডাঙ্গার আসাননগর গ্রামের ক্লাবপাড়ার বজলুর রহমানের ছেলে সাহাবুল হক (২৪), একই গ্রামের শেষ পাড়ার পিন্টু রহমানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৫) ও মাঝের পাড়ার মাসুদ আলীর ছেলে বিদ্যুত আলী (২৩)। আর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শাকিল হোসেন (২৩) আসাননগর স্কুল পাড়ার তাহাজ উদ্দীনের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানায়, ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন বাজার পাড়ার বাড়ি থেকে বৃদ্ধ দম্পতি নজির মিয়া (৭০) ও ফরিদা বেগমের (৬০) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরদিন ওই বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে ডালিয়ারা পারভীন শিলা বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এর ৪ দিন পর হত্যাকারী সন্দেহে ওই আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

পরবর্তীতে, ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ওই চার আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শিহাব উদ্দীন।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, বৃদ্ধ নজির আলী ছিলেন একজন বালু ব্যবসায়ী। আর আসামি সাহাবুল হক ছিলেন তার বালু ব্যবসায় চলিত যানের ড্রাইভার। ড্রাইভার হওয়ার সুবাদে ওই দম্পতির বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল সাহাবুলের। এই সুযোগে ওই বাড়িতে কোথায় টাকা পয়সা থাকে তাও জানতো সে। পরিকল্পনা মাফিক বালু কেনার নাম করে আসামিরা ওই দম্পতির বাড়ি থেকে নগদ টাকা লুট করতে যায়। এসময় বৃদ্ধা ফরিদা বেগম বাধা দিলে তাকে প্রথমে তাকে শ্বাসরোধ এবং কুপিয়ে হত্যা করে। পরে বৃদ্ধ নজির মিয়াকেও হত্যা করে তারা। খুন করে লুট করে নিয়ে যায় নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি মোবাইল ফোন।

মামলায় মোট ১৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় সরাসরি হত্যার সাথে জড়িত ৩ জনকেই মৃত্যদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। লুট করে নেয়া মোবাইল ফোনের ক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলার রায়ে বাদি পক্ষ সন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জানান, শুধুমাত্র জবানবন্দীর ওপর ভিত্তি করেই মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং রায় ঘোষনা করা হয়েছে। এ রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। তাই উচ্চ আদালতে আপিল করার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এই আইনজীবী।

/এএস

Exit mobile version