Site icon Jamuna Television

ইরানের সাথে কি যুদ্ধে জড়াবে ইসরায়েল?

ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো হামলা চালিয়েছে ইরান। প্রায় ৫০ বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে বৈরি সম্পর্ক থাকলেও সরাসরি কখনো ইসরায়েলে ভূখণ্ডে হামলা চালায়নি তেহরান। দুই দেশের বৈরি সম্পর্ক আরেক দফায় উত্তপ্ত হয় সাত অক্টোবরে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সেই হামলার জন্য তেহরানকেই দায়ী করে আসছে তেলআবিব।

সাত মাস ধরে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ালেও এতদিন হুমকি-ধমকি দিয়ে আসা দেশটি এবার হামলা চালালো শত্রুদেশের ভূখণ্ডে। বলা হচ্ছে, এতদিন ইরানিদের ওপর বিচ্ছিন্নভাবে হামলা হলেও দূতাবাস ভবনের মতো স্পর্শকাতর স্থানকে প্রথমবার লক্ষ্য বানিয়েছে ইসরায়েল। এ কারণেই ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালানোর মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেহরান।

এই হামলার পর প্রশ্ন জোরালো হয়েছে তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ শুরু হচ্ছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনদিকে যাবে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি, তা নির্ভর করছে ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার ওপর। ইরান স্পষ্ট করেছে, আপাতত আর হামলা চালাবে না তারা। তবে, তেল আবিব আগেই বলেছিল, হামলা চালালে পাল্টা জবাব দেয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিধর দুই দেশের গতিবিধির দিকে নজর সারা বিশ্বের।

অন্যতম সামরিক শক্তিধর দুই দেশের এই সংঘাত কতটা প্রভাব ফেলবে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে সেই হিসাবও কষছেন অনেকে। এরইমধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ডাকা হয়েছে জরুরি বৈঠক। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের এই নজীরবিহীন হামলা পাল্টে দিতে পারে অঞ্চলটির রাজনীতির সমীকরণ। বলা হচ্ছে, স্বার্বভৌমত্ব নিয়ে নিজ দেশের নাগরিকদের তোপের মুখে পড়ার আগেই হামলার জবাব দিতে পারে ইসরায়েল সরকার। যা তৈরি করতে পারে আরও একটি যুদ্ধ পরিস্থিতি।

সামরিক বিশ্লেষক ব্রাডলি বোম্যান বলেন, ইসরায়েলে ইরানের এই হামলা নজিরিবিহীন। ইরান এমনকিছু সীমা এবার অতিক্রম করেছে যা অতীতে কখনও ঘটেনি। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে নতুন একটি মধ্যপ্রাচ্য দেখতে যাচ্ছি। ইরান রেডলাইন ক্রস করেছে। কাজেই ইসরায়েলও এর জবাব দেবে বলেই মনে করেন তিনি।

অন্যদিকে, হামলার পর পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। তাদের দাবি, দূতাবাসে আক্রমণে জবাব দিয়েছে তারা। জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধি বলেন, বিষয়টি এখানে শেষ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ইসরায়েলি সাম্রাজ্য আরেকটি ভুল করলে আরও কঠোর জবাব দেবে তেহরান। ইরান ও ইসরায়েলের সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূরে থাকা উচিৎ বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

উল্লেখ্য, গাজায় আগ্রাসন শুরু পর থেকেই বেশ চাপেই আছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মোকাবেলা করতে হচ্ছে হিজবুল্লাহকেও। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের মতো শক্তিশালী দেশের সাথে সংঘাতে জড়াবে কিনা তা সেটিই এখন দেখার বিষয়।

/এনকে

Exit mobile version