Site icon Jamuna Television

বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড হলেও সঞ্চালনের জটিলতা কাটেনি

মাহফুজ মিশু:

দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। তীব্র গরমে মানুষের ভোগান্তি চরমে। এমন বিরূপ আবহাওয়ায় বিদ্যুৎ সবচেয়ে জরুরি। তাই চাহিদাও বেড়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) হিসাবে, এ বছর গ্রীষ্মে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা সাড়ে সতেরো হাজার মেগাওয়াট হবে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ ১৬ হাজার ৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছে। এই হিসেবে দিনে এক হাজারেরও বেশি মেগাওয়াট লোডশেডিং হওয়ার কথা।

যদিও বাস্তবতা ভিন্ন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ, রংপুর ও কুমিল্লাসহ পল্লী বিদ্যুতের বেশিরভাগ এলাকায় লোডশেডিং বেড়েই চলেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, গ্রামে-গঞ্জে ৪ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না।

ভুক্তভোগী একজন বলেন, বিদ্যুৎ এই আসে, আবার এই চলে যায়। সারাদিন হাতপাখা ব্যবহার করতে হয়। অপর একজন জানান, গরমের কারণে শিশুদের পড়ালেখা ও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে।

এদিকে, এক এসএসসি পরীক্ষার্থী জানান, রাতের বেলায় লোডশেডিংয়ের জন্য পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে। আবার দিনের বেলায় গরমের জন্য ঘরে থাকা যায় না। এক ব্যবসায়ী জানান, লোডশেডিংয়ের জন্য দোকানে ক্রেতা আসছেন কম।

পল্লী বিদ্যুতের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ডিজিএম (কারিগরি) মো. মাসুদুল আলম বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ৯০ থেকে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। তখন লোডশেডিং খুব কম হয়। বর্তমানে তাপপ্রবাহের ফলে ১৫৩ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুতের চাহিদা তৈরি হয়েছে। ফলে বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ মেগাওয়াটের মতো লোডশেডিং হচ্ছে।

গত দেড় শতকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কয়েকগুণ বাড়লেও এর সাথে তাল মিলিয়ে সঞ্চালন লাইনের কাজ করা হয়নি। ফলে উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটা সবসময় সরবরাহ করা যায় না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমরা তো চাইবো লোডশোডিং মুক্ত রাখতে। বিদ্যুৎকেন্দ্রও তৈরি। ওই লেভেল পর্যন্ত ট্রান্সমিশন লাইনও তৈরি আছে। আমাদের সমস্যা হলো এগুলো চালু রাখা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা করা। বিদ্যুৎ সঞ্চালনায় অল্প যে কাজ বাকি রয়েছে, সেগুলোর কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।

এমন অবস্থায় ‘বৃষ্টি হলে গরম কমবে, লোডশেডিংও থাকবে না’ ভুক্তভোগী মানুষের মতো একই আশা বুনছেন বিদ্যুৎ বিভাগও।

/এমএন

Exit mobile version