Site icon Jamuna Television

পথের কাঁটা সরানোর প্রাচীন ‘মিশন’ গুপ্তহত্যা

গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কেনেডি

‘গুপ্তহত্যা’- পৃথিবীর ইতিহাসে পথের কাঁটা সরিয়ে ফেলার প্রাচীন পন্থা। এই কৌশলে, শত্রুকে মেরে ফেলার নজির ইতিহাসে অনেক। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জনএফ কেনেডি থেকে শুরু করে মার্টিন লুথার কিং- অনেকেই হয়েছেন টার্গেট কিলিংয়ের শিকার। আলোচিত এসব মৃত্যুর বেশিরভাগেরই রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় মদদেই ঘটানো হয় এসব হত্যাকাণ্ড।

১৯৬৬ সালের ২২ নভেম্বর। বিলাসবহুল লিমোজিনে করে স্ত্রীকে সাথে নিয়ে টেক্সাসের ডিলে প্লাজা পার্ক পেরোচ্ছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি। তাকে দেখতে আশপাশে ভিড় করে ছিলেন ভক্ত-অনুরাগীরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব উলট-পালট হয়ে যায়।

গলায় আর মাথার খুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হলেন কেনেডি। গ্রেফতার করা হলো লি হার্ভি অসওয়াল্ড নামে এক মেরিন কর্মকর্তাকে। কিন্তু গ্রেফতারের দু’দিন পর হত্যা করা হয় তাকেও। ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও উদ্ধার হয়নি কেনেডি হত্যার রহস্য। অনেকেরই ধারণা- এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা ‘কেজিবি’।

১৯৬৮ সালে একইভাবে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন কৃষ্ণাঙ্গ নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। টেনেসির মেমফিসের এক মোটেলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মার্টিন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। অনেকেই মনে করেন- কালোদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার এই নেতাকে হত্যার পেছনে হাত ছিল খোদ মার্কিন প্রশাসনেরই। গুপ্তহত্যার শিকার হন মহাত্মা গান্ধীও। ১৯৪৮ সালে দিল্লীর বিড়লা হাউজে গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। নাথুরাম গডসে নামে এক উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতা পর পর তিন বার গুলি চালিয়ে হত্যা করেন তাকে।

টার্গেট কিলিং এর জগতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত দু’টি নাম সিআইএ আর মোসাদ। যার একটি মার্কিন ও অন্যটি ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা। সরকারি মদদেই যারা হত্যা করেন কথিত ‘দেশদ্রোহী’দের। দেশের সীমা পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে গিয়েও চালানো হয় হত্যাকাণ্ড।

১৯৫৬ সালে মিসরের দুই সামরিক কর্মকর্তা মুস্তাফা হাফিজ ও সালাহ মুস্তফাকে পার্সেল বোমা পাঠিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। ২০০২ সালে কাশেম ব্রিগেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সালাহ শাহাদিকে হত্যা করে দেশটি। ২০০৪ সালে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে মোসাদের টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন সংগঠনটির দুই প্রতিষ্ঠাতা শেখ আহমেদ ইয়াসিন ও আব্দুল আজিজ আল রান্তিসি।

গুলি, বোমা তো আছেই টার্গেটকে শেষ করতে অভিনব বহু পথও অবলম্বন করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। চুরুট বা সিগারেটে বিস্ফোরক পুরে রাখা; ডাইভিং স্যুটে বিষ মাখিয়ে রাখা, গাড়ির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা হ্যাক করাসহ বিভিন্ন চমকপ্রদ উপায় বেছে নেয়ারও উদাহরণ রয়েছে।

শোনা যায়, কিউবার সমাজতান্ত্রিক নেতা ফিদেল কাস্ত্রোকে কয়েকশ বার হত্যার চেষ্টা করেছে সিআইএ; খোদ যুক্তরাষ্ট্রই স্বীকার করেছে ৮ বারের কথা।

/এনকে

Exit mobile version