Site icon Jamuna Television

৩০ বার এভারেস্ট জয় করে নেপালি শেরপার নতুন রেকর্ড

এভারেস্ট শীর্ষে শেরপা কামি রিতা। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট। পর্বতারোহীদের স্বপ্ন থাকে এই পর্বতের চূড়া স্পর্শ করার। কেউ যদি একবার এভারেস্টের চূড়ায় নিজের পদচিহ্ন রেখে যেতে পারেন, ধন্য ধন্য রব উঠে যায়। আর যদি কেউ একবার-দুবার নয়, ৩০ বারের মতো এভারেস্ট শীর্ষে ওঠেন! কী, বিশ্বাস হচ্ছে না তো?

হ্যাঁ, এমন অবিশ্বাস্য কাজই করেছেন নেপালি শেরপা কামি রিতা। আজ বুধবার (২২ মে) নিজের স্বপ্ন সত্যি করে ৩০ বারের মতো এভারেস্টের চূড়ায় পদচিহ্ন রেখেছেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএন।

এভারেস্ট জয়ের এটা (৩০ বার) নতুন রেকর্ড। এর আগে, সবচেয়ে বেশি (২৯ বার) এভারেস্ট জয়ের রেকর্ডও ছিল তারই। এবার তিনি নিজের রেকর্ড নিজেই ভাঙলেন। এ যেন নিজের সঙ্গে নিজেরই মোকাবেলা!

এভারেস্ট সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, এটি ছিল ১০ দিনের মাথায় ‘এভারেস্ট ম্যান’-এর দ্বিতীয় আরোহন। এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করতে যেখানে সাধারণ পর্বতারোহীদের সময় লাগে বেশ কয়েক দিন, সেখানে এতো কম সময়ে কোনো পর্বতারোহীদের একাধিকবার এভারেস্ট আরোহণের এমন ঘটনা বিরলই বলা যায়।

‘এভারেস্ট ম্যান’ কামি রিতা

বেজক্যাম্পের অভিযান পর্যবেক্ষণ ও মাঠ পর্যায়ের প্রধান কর্মকর্তা গৌতম সামাজিকমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি পোস্ট করে বলেছেন, কামি রিতা তার নিজের রেকর্ড ভেঙেছেন.. তিনি ৩০তম বার নিজের পদচিহ্ন এঁকে দিলেন বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়াটিতে।

এর আগে, গত ১২ মে সকাল ৭টার কিছু পরে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এই পর্বতে বেশিবার আরোহণের নতুন রেকর্ড গড়েন ৫৪ বছর বয়সী কামি রিতা। সেবার তিনি ২৯তম বারের মতো ৮ হাজার ৮৪৯ মিটার উঁচু এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান। ২৯ বার এভারেস্ট জয়ের রেকর্ড করার পর এএফপিকে তখন বলেছিলেন, আমি এই রেকর্ড গড়তে পেরে বেশ খুশি। তবে রেকর্ড গড়া হয় ভাঙার জন্যই।

উল্লেখ্য, কামি রিতার এভারেস্ট-যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। ওই সময় থেকেই গাইড হিসেবে পর্বতারোহীদের পথ দেখান এই নেপালি শেরপা। এরপর থেকে প্রায় প্রতিবছরই ২৯ হাজার ফুট উঁচু এভারেস্টশৃঙ্গটি জয় করছেন। এর মধ্যে বাদ পড়ে কেবল ২০১৪, ২০১৫ ও ২০২০ সাল। পরিচিতজনেরা কামি রিতাকে ডাকে ‘এভারেস্ট ম্যান’। এমন নামকরণে নিশ্চয়ই কেউ আপত্তি জানাবে না।

এভারেস্টজয়ী বাবর আলী

বাংলাদেশের এভারেস্ট অভিযান

এদিকে, দুনিয়ার সর্বোচ্চ চূড়ায় ওঠার প্রথম সফল অভিযান হয় ১৯৫৩ সালে। কিন্তু বাংলাদেশের কেউ এখানে আরোহণ করার ইতিহাস গড়ে ২০১০ সালে। সে বছর ২৩ মে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে মুসা ইব্রাহীম এভারেস্টের চূড়া জয় করেন।

এরপর ২০১১ সালের ২১ মে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট শীর্ষে ওঠেন মোহাম্মদ আবদুল মুহিত। পরের বছর প্রথম বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন নিশাত মজুমদার।

এর মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ওয়াসফিয়া নাজরীন দ্বিতীয় বাংলাদেশি নারী হিসেবে এভারেস্ট জয় করেন। তার সঙ্গে ছিলেন মোহাম্মদ আবদুল মুহিত ( নিজের দ্বিতীয়বার)।

পরের বছর ২০১৩ সালে খালেদ হোসেন নামে আরেক বাংলাদেশি এভারেস্ট জয় করলেও ফেরার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

এই তালিকায় এগারো বছর পর নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন বাবর আলী। গত রোববার (১৯ মে) সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ তিনি ‘সামিট’ করেন। বলাই বাহুল্য, তার সামিটের অর্থের বড় একটি অংশ এসেছে ‘ক্রাউন্ডফান্ডিং’ এর মাধ্যমে।

/এএম

Exit mobile version