Site icon Jamuna Television

এফএ কাপের ফাইনালে ম্যানচেস্টার হয়ে উঠলো শুধুই লাল

মেহেদী হাসান রোমান

এ যেন গতবছরের মধুর প্রতিশোধ। একই স্কোরলাইন, কিন্তু উল্টো ফলাফল। গতবছর ম্যানচেস্টার আনন্দে নীল হলেও এবার যেন ভালোবাসার রং লালে রঙিন। সব হারানো ম্যানইউয়ের এর চেয়ে ভালো উপলক্ষ আর কী বা হতে পারে? ঐতিহ্যবাহী এফএ কাপের ফাইনাল আর লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম। লাল গ্যালারিতে উল্লাস আর টেন হাগ শিষ্যদের জয় যেন ওয়েম্বলির সবুজ ঘাসে কৃষ্ণচূড়া ফুটিয়ে তুললো। ২-১ এ ম্যাচ জিতেছে রেড ডেভিলসরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই সিটিকে একরকম চেপে ধরে ইউনাইটেড। গারনাচো-ব্রুনো-রাশফোর্ডরা মিলে রীতিমতো ত্রাস চালায় সিটির রক্ষণভাগে। সুযোগ বুঝে স্কোরও করে ফেলে তারা। সিটি গোলকিপার ওর্তেগাও যেন বোকামির ভাগ্যবরণ করেন পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে এসে। সেই ফায়দা পুরোপুরি লুফে নেন ইউনাইটেড ফরোয়ার্ড গারনাচো। ম্যাচের সময় তখন মাত্র ৩০ মিনিট। এখনও তিনভাগের দুভাগ বাকি।

ওয়েম্বলির সিটি ভক্তরা দেখতে চাইলেন ক্লাবের ঘুরে দাড়ানো। কিন্তু বিধিবাম, উল্টো ৯ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় গোল হজম করে ফেলে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা। ঠিক আগের মিনিটে অফসাইডে বাতিল হওয়া রাশফোর্ডের গোলের আক্ষেপ দূর করেন সতীর্থ কোবি মাইনু। বক্সের বা দিক থেকে জোরালো এক শটে জালে বল পাঠান তিনি। ব্যবধান দ্বিগুন। ওয়েম্বলিতে প্রথমার্ধের আগেই লাল উৎসব।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন সিটির স্ট্রাইকাররা। জোড়া গোলে পিছিয়ে থাকা ম্যাচে ফেরা অনেক কঠিন। তবুও চেষ্টা চালাতে থাকেন ফোডেন-হালান্ডরা। নরওয়েজিয়ান সুপারস্টারের শট বারে লেগে ফিরে আসে একবার। তবে নির্ধারিত সময় শেষ হবার ৩ মিনিট আগে আশার সঞ্চার করে গার্দিওলার শিষ্যরা। দারুণ এক শটে ইউনাইটেড গোলকিপারকে প্রতিহত করে বল জালে পাঠান ডকু। ম্যাচে দেয়া হয় অতিরিক্ত আরও ৭ মিনিট। কিন্তু ইউনাইটেড রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে বল আর জালে পাঠাতে পারেনি সিটিজেনরা।

ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ইউনাইটেডের এ জয় শুধু রেড ডেভিলদের একটি ট্রফি ছুঁয়ে দেখার উপলক্ষই নয়। লন্ডনের পড়ন্ত বিকেলে এক প্রশান্তির নিঃশ্বাস, সেইসাথে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় যে দলটি কোথাও নেই তাদের ফিরে আসার বার্তা হয়ত আজকের এফএ কাপের ফাইনাল।

যখন সবকিছু বিপক্ষে তখন ইউনাইটেড জিতলো ১৩ তম এফএ কাপ। তেরো নাকি অশুভ সংখ্যা, তবে এ অশুভ সংখ্যার অর্জনের উপলক্ষ দিয়েই কি টেন হাগ শিষ্যরা ফিরবে? হয়ত সব হারানো ইউনাইটেডের খারাপ শেষের শুরু এটিই, এই ম্যাচই। সামনের সিজনে ইউনাইটেড ফিরবে কি না তা সময়ই বলে দেবে। আপাতত তাদের আনন্দ আর গর্জন টেমসের বয়ে যাওয়া নদীর মতোই চলতে থাকুক।

Exit mobile version