Site icon Jamuna Television

প্রথমবার বিশ্বকাপে খেলতে আসা উগান্ডার উত্থানের গল্প

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছে উগান্ডা। ব্রিটিশ কলোনি উগান্ডায় ক্রিকেট শুরু হয় ১৯৪০ সাল থেকে। তবে সেটা খুবই সীমিত আকারে। এশিয়ান বেনিয়া ও উপনিবেশ স্থাপনকারী ব্রিটিশদের মধ্যে শুরু হওয়া ক্রিকেট ধীরে ধীরে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়ায়। বর্তমান উগান্ডা দলটি পুরোপুরি নিজেদের ভূমিপুত্রদের নিয়ে গড়া দল। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা কানাডার মতো অভিবাসীদের নিয়ে তৈরি দল নয়।

উগান্ডার ক্রিকেটের ইতিহাস কিন্তু একেবারে সাম্প্রতিক নয়। ১৯৭৫ সালে পূর্ব আফ্রিকা নামে ক্রিকেট খেলেছে উগান্ডা, কেনিয়াসহ আরো কয়েকটি দেশ। এরপরে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি খেলেছে তারা পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকা নামে। এবার আর মহাদেশীয় অঞ্চল না একেবারে দেশের নাম দিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলছে উগান্ডা। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাদের অংশ নেয়াটাই একটা ইতিহাস। পূর্ব আফ্রিকার দেশটি যেকোনো সংস্করণের ক্রিকেটে বিশ্বকাপ খেলছে এবারই প্রথম।

ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৮ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী দেশ হিসেবে ক্রিকেটের পরিসরে ঢোকে উগান্ডা। কিন্তু আদতে উগান্ডার ক্রিকেট গুছিয়ে ওঠে ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে। এই সময়ে কোচ লরেন্স মাহাটলেইন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার লক্ষ্যে উগান্ডা ক্রিকেট দলের সাথে কাজ করা শুরু করেন। তিনি এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলানোর একটা কার্যকর পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন এবং সফল হন।

২০২১ সালের পর থেকে উগান্ডা আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে। গত ২ বছরে ৫৯ ম্যাচে জয়ের সংখ্যা ৫১টি আর হেরেছে মাত্র ৮টি ম্যাচে। বিশ্বকাপ কোয়ালিফাই’তে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিট কাটে আফ্রিকান দলটি।

ছবি: সংগৃহীত

তবে তাদের এই পর্যায়ে আসতে একজনের অবদান অনেক। ৪৩ বছর বয়সী ফ্রাঙ্ক সুবুগা। তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন ২৭ বছর ধরে। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার উগান্ডার এ স্পিনিং অলরাউন্ডার। তবে তার এই যাএা একদমই সহজ ছিলো না।

১৯৯৭ সালে যে আইসিসি ট্রফি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভিত গড়ে দিয়েছিল। সেই আসরে আন্তর্জাতিক পথচলা শুরু করেছিলেন সুবুগা। ২৭ বছর আগে আইসিসি ট্রফি খেলেছিলেন তিনি পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকার হয়ে। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সমন্বয়ে গড়া দলটি বিলুপ্ত হয়ে যায় ২০০৩ সালে। তবু তিনি থেমে থাকেননি, বিশ্বকাপ খেলার অলীক স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যান। অবশেষে ৪৩ বছর বয়সে এসে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে সুবুগার।

ছবি: সংগৃহীত

তবে বিশ্বকাপ বিশাল কিছু করার আকাশ-কুসুম স্বপ্ন দেখছেন না তারা। নিজেদের বিগ হিটিং দল মনে করে না তারা। কেবল নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চান। নিজেদের দেশে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেয়াই তাদের মূল লক্ষ্য।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে অধিনায়ক মাসাবা বলেছেন, আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরা। ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক দর্শকরা যাতে দেখে উগান্ডা নামের একটা দেশ ক্রিকেট খেলছে।

/ওয়াইবি/আরআইএম

Exit mobile version