Site icon Jamuna Television

ইতিহাস লেখার অপেক্ষায় আফগানিস্তান

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো শেষ চারে উঠেছে আফগানিস্তান। দেশটিতে চলছে বেশ আনন্দ-উৎসব। সেই উচ্ছ্বাসে উচ্ছ্বসিত দলটির প্রধান কোচ জনাথন ট্রটও। উৎসবের সেই মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিতে চান বলে জানিয়েছেন সাবেক এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। সেজন্য আগে সেমিফাইনালে হারাতে চান দক্ষিণ আফ্রিকাকে। যদিও প্রোটিয়ারা শক্তিমত্তায় অনেক বড় দল। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে কাউকেই আফগানিস্তান হারাতে পারে বলে বিশ্বাস ট্রটের।

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ট্রফির অংশ হিসেবে ২০০৪ সালে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তান অফিসিয়াল ম্যাচ খেলেছিল। যেখানে ১৫টি দলের অংশগ্রহণ ছিল। বিশ বছর পর ২০ দলের সমন্বয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় আসরে অংশগ্রহণ করেছে তারা। সেই বিশ্বকাপেই আফগানদের চমক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অনেক শক্তিশালী দলকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে তারা।

মাত্র দুই দশকে তারা যা অর্জন করেছে, তা অন্য অনেক দল দ্বিগুণ সময়েও পারে নি। আফগানিস্তান ক্রিকেটে বরাবরই অসাধারণ প্রতিভা উঠে এসেছে। যেমন, তাদের অধিনায়ক এবং প্রধান স্পিনার রশিদ খান বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-২০ খেলোয়াড়। তাদের দলে এমন আরও প্রতিভাবান স্পিনার রয়েছে যারা তাদের স্পিন ঘূর্ণি দিয়ে যেকোনো দলকে কাবু করতে পারে। স্পিনারদের পাশাপাশি পেইস বোলিং ডিপার্টমেন্টেও বেশ শক্তিশালী।

ব্যাটিংয়ে ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রানের মালিক। পাওয়ারপ্লে’তে প্রতিপক্ষকে আঘাত হানতে সক্ষম তার ব্যাট। আফগানিস্তানের অবশ্য ব্যাটিংয়ে তেমন গভীরতা নেই, বিশেষ করে মিডল অর্ডারে, যা তাদের চিন্তার কারণ। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান ওপেনিং চারটি ইনিংসে ৫০-এর বেশি পার্টনারশিপ গড়েছেন। মিডল অর্ডারের জন্য নিজেদের প্রমাণের চ্যালেঞ্জ হতে পারে এই ম্যাচ।

বাংলাদেশকে হারানোর পর রশিদ খান বলেছেন, আমরা সেমিফাইনালে উঠতে পারি, এটা একমাত্র বলেছিলেন লারা। আমরা সেই কথা সত্যি প্রমাণ করলাম। এখানে এসে একটা পার্টিতে দেখা হয়েছিল তার সঙ্গে। বলেছিলাম, তার কথা ভুল হতে দেব না। আমাদের স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার। আমরা যেভাবে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে শুরু করেছিলাম, তাতেই আত্মবিশ্বাস পেয়ে গিয়েছিলাম।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিফাইনাল কীভাবে খেলতে চান সেটাও বলেছেন রশিদ, আমরা খুব সহজভাবে সেমিফাইনালটা খেলতে চাই। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করতে চাই। সেমিফাইনালে আমরা কোনো চাপ নিয়ে খেলব না। চাপমুক্ত হয়ে নির্ভার ক্রিকেট খেললে কিন্তু এইডেন মার্করামের দলকে বিপদে পড়তে হবে।

অন্যদিকে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনটি থ্রিলার ম্যাচে জিতে সেমিতে উঠেছে তারা। দারুণ খেলে দিন বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে এই দল। কিন্তু উদীয়মান আফগানদের নিয়ে বেশ চিন্তায় আফ্রিকানরা।


যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার গতিশীল মিডল অর্ডার রয়েছে। এইডেন মার্করাম, ট্রিস্টান স্টাবস এবং হেনরিখ ক্লাসেন স্পিন মোকাবেলায় বেশ ভালো সক্ষম। অপরদিকে, ইনিংস শেষ করার জন্য দুর্দান্ত অভিজ্ঞ ডেভিড মিলার নিজের দিনে যেকোনো দলকে বিপদেম পেলতে পারে। প্রথম বিশ্বকাপ শিরোপা নিশ্চিত করতে হলে আরও দুটি ম্যাচ জিততে হবে আফ্রিকানদের।

বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলই কখনো অপরাজিত কোনো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি, তাই দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এবার ইতিহাস নতুন করে লেখার সুযোগ রয়েছে। অন্যদিকে আফগানিস্তানের নতুন ইতিহাস লেখার অপেক্ষা।


এখন দেখার ব্যাপার, ‘আফগান রূপকথা’ নাকি ‘চোকার্স প্রোটিয়া’ বিশ্বকাপের রোল অব অনারে কার ঠাঁই হয়।

ওয়াইবি/এমএইচআর

Exit mobile version