Site icon Jamuna Television

জুলাই কেন বছরের উষ্ণতম মাস?

উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্ম সবেমাত্র শুরু হয়েছে। তবে ইতিমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে তাপপ্রবাহ অনেক বেশি। প্রচণ্ড গরমের কারণে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত ও সৌদি আরবসহ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

ঐতিহাসিকভাবে, জুলাই বছরের উষ্ণতম মাস। এ সময় উত্তর গোলার্ধের কিছু অংশের তাপমাত্রা নিয়মিত ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়।

জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও)-র তথ্য অনুযায়ী, গত ১ লাখ ২০ হাজার বছরের মধ্যে, ২০২৩ সালের জুলাই মাস রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণতম মাস ছিল। চলতি বছরটি-ও ইতিমধ্যেই সবচেয়ে উষ্ণতম মাসগুলোর মধ্যে একটি হওয়ার পথে রয়েছে।

গ্রাফে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করে। ছবি: আল জাজিরা।

পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় তার অক্ষে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি কাত হয়ে যায়। এর ফলে বছরের বিভিন্ন সময়ে সূর্যের আলোর দিক পরিবর্তিত হয়, যা পরিবর্তনশীল ঋতু সৃষ্টি করে।

জ্যোতিবিজ্ঞানীদের গ্রীষ্মকালীন পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গ্রীষ্মে উত্তর গোলার্ধে উত্তরায়ণের সময় ২০ কিংবা ২১ জুন এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ২১ থেকে ২২ ডিসেম্বর। এটি সেই দিন, যখন সূর্য দুপুরে আকাশের সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছায়, যা বছরের দীর্ঘতম দিন এবং সবচেয়ে ছোট রাতের দিকে নিয়ে যায়।

পৃথিবীর যে অংশটি সর্বাধিক পরিমাণে সরাসরি সূর্যের আলো গ্রহণ করে তা বিষুব রেখা থেকে ২৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি উপরে, যা ট্রপিক অফ ক্যান্সার (পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তরের অক্ষাংশের বৃত্ত যেখানে সূর্যকে সরাসরি উপরে দেখা যায়) হিসাবে পরিচিত।

মূলত, ট্রপিক অফ ক্যান্সারের এই লাইনটি মেক্সিকো, বাহামা, মিশর, সৌদি আরব এবং ভারতের মধ্য দিয়ে যায়। যার কারণে গ্রীষ্মে প্রচুর গরম অনুভূত হয়।

উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল

বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তর গোলার্ধে বাস করে, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। পৃথিবীর অর্ধেক ভূমির ভর
জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গ্রীষ্মকালের তাপ শোষণ করে। তাই এই মাসগুলোতে সূর্যের আলো আরও সরাসরি মাটিতে পড়ে, কারণ, দিনের আলো দীর্ঘসময় থাকে। তাই গরম বেশি অনুভূত হয়।

বিপরীতভাবে, শীতের মাসগুলিতে, এই একই অবস্থানগুলি নভেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির শেষের দিকে সূর্যের আলোর প্রভাব থাকে না। ফলে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়।

গ্রীষ্মের মাসগুলিতে, সূর্যের তাপশক্তি মাটিতে বেশি শোষিত হয়। ফলে আশেপাশের বাতাসকে আরও বেশি উত্তপ্ত করে তোলে এবং উষ্ণতর তাপমাত্রার দিকে পরিচালিত করে।

পৃথিবীর পৃষ্ঠ, বিশেষ করে সমুদ্রের মতো বৃহৎ জলাশয়, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের ৭০ শতাংশ নিয়ে গঠিত, সূর্য থেকে তাপ শোষণ করতে এবং পরবর্তীকালে তা ছেড়ে দিতে বেশ সময় নেয়।

এই কারণেই জুলাই মাসে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দুপুরের দিকে হয়, মধ্যাহ্নে নয়। ফলে জুনের পরিবর্তে জুলাই মাসে সাধারণত সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা অনুভূত হয়।

সারা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে বাড়ছে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি। তাই গরমে শীতল থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রচুর গরমে কীভাবে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এড়িয়ে চলবেন

সূত্র: আল জাজিরা।

/এআই

Exit mobile version