Site icon Jamuna Television

আসছে নতুন মুদ্রানীতি: পর্যালোচনার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের

আলমগীর হোসেন:

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি। প্রায় দেড় বছর ধরে এটি ৯ শতাংশের উপরে। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১ শতাংশের কাছাকাছি। বাড়তি দামের উত্তাপে পুড়ছে সাধারণ মানুষ।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে নীতি সুদহার। শুরুতে গড়িমসি করলেও শেষ পর্যন্ত বাজার ব্যবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে ব্যাংক ঋণের সুদহার। কিন্তু এরপরও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এমন অবস্থায় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে নতুন অর্থবছরের প্রথম মুদ্রানীতি। তাতে আগের ধারাবাহিকতা থাকবে বলেই ধারণা অর্থনীতিবিদদের। যদিও এ ধরনের মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কতটা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আমাদের অর্থনীতি কিন্তু অতটা মনিটাইজ না। সুতরাং এখানে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের অন্যান্য যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে, তার মধ্যে একটি হলো রাজস্ব নীতি, আর বাজার ব্যবস্থাপনায় কোনো ধরনের ব্যতয় আছে কি না। সুতরাং এ জায়গাগুলোতে হাত না দিয়ে কেবল অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলাম, পলিসি রেট বাড়ালাম, এটা করে কিন্তু মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেনেটর (র‍্যাপিড) চেয়ারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা যখন মনিটরিং পলিসি ঘোষণা করি, তখনই যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে তা কিন্তু না। সুদের যে হার নির্ধারণ করা হয়েছে, তাতে সুদের হার যথেষ্ট পরিমাণ বেড়েছে, এর প্রভাবটা আসতে হয়তো একটু সময় লাগবে।

এদিকে, তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার ফলে বাড়ছে মুদ্রা সরবরাহ। যা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। এটি মূদ্রানীতির সাথে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদরা।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তারল্য সংকটের কারণে কিছু কিছু ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা দিতে হচ্ছে। তাই অর্থ সরবরাহের যে লক্ষ্য ধরা হয়, তা পুরো সম্ভব হয় না।

বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপরও মূল্যস্ফীতি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, সামষ্টিক আথনৈতিক স্থিতিশীলতায় এটি কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মূল্যস্ফীতি যদি উচ্চ স্তরে থাকে, তখন আমাদের সেভিংস ও ডিপোজিট রেট উপরে রাখতে হচ্ছে। এর মানে আমাদেরকে ল্যান্ডিং রেট উপরে রাখতে হচ্ছে। ঋণ খেলাপির কারণে ল্যান্ডিং রেট আরও উপরে রাখতে হচ্ছে। এই যে একটা দুষ্টচক্র তৈরি হয়েছে…।

মুদ্রানীতি দিয়ে ব্যাংকিং খাতের সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়, এ জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার দরকার বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

/এমএন

Exit mobile version