Site icon Jamuna Television

নেইমারের অনুপস্থিতি ভালোই টের পাচ্ছে সেলেসাওরা

অদ্ভুদ এক সময় পার করছে ব্রাজিলের ফুটবল। বিশ্বকাপ কিংবা কোপা আমেরিকা, কোথাও ভক্তদের জন্য স্বস্তির সুখবর নিয়ে আসতে পারছে না দানিলোরা। তবে সাময়িকভাবে এটি ঘটলে না হয় মেনে নেয়া যেত। ব্রাজিলের এই খারাপ সময় কতখানি বিস্তৃত হবে তা বোঝা যাচ্ছে না। অনেকদিন ধরে দলে নেই তারকা খেলোয়াড় নেইমার। তার অনুপস্থিতি হারে হারে টের পাচ্ছে ব্রাজিল। অনেক নতুন ও তরুণের উপস্থিতিতেও কোনো আশার আলো দেখাতে পারেনি পাঁচবারের বিশ্ব চ‍্যাম্পিয়নরা। আক্রমণভাগের বিবর্ণতায় আরও স্পষ্ট হলো নেইমারের অভাব।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বিজ্ঞাপনের জন্য রোনালদিনহোর বলা কথাগুলোই যেন এই ব্রাজিলের জন্য সত্যির খুব কাছাকাছি। বিশ্বকাপ জয়ী বলেছিলেন, দলে নিবেদন ও দৃঢ়তার অভাব রয়েছে। দিনহো আরও বলেছিলেন, সবকিছুই অনুপস্থিত, তাড়না, উচ্ছ্বাস। তাদের ভালো খেলতে হবে। তাই আমি তাদের কোনো ম্যাচই দেখব না। আমি ব্রাজিলের খেলা বর্জন করব।

মাঠের খেলায় দেশের কিংবদন্তির মান ভাঙাতে ব্যর্থ ব্রাজিল দল। না মন ভরানোর মতো খেলতে পেরেছেন রাফিনিয়া, রদ্রিগো, ভিনিসিয়ুসরা। না দিতে পেরেছেন ভবিষ‍্যতের জন‍্য কোনো ইঙ্গিত। আসর থেকে সেলেসাওদের বিদায়ের পর ব্রাজিল কোচসহ একাধিক খেলোয়াড় মুখোমুখি হয়েছিলেন গণমাধ‍্যমের। তবে সবার কথাতেই এখন একই সুর। পরবর্তী লক্ষ্য বাছাইপর্ব পেরিয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়া।

হলুদ-সবুজ শিবিরের সাম্প্রতিক পারফরম‍্যান্স বলছে, এই লক্ষ‍্য পূরণে নেইমারের উপস্থিতি খুব জরুরি। হাঁটুর চোটে গত বছরের অক্টোবর থেকে মাঠের বাইরে আছেন এই তারকা ফরোয়ার্ড। এই সময়ে প্রীতি ম্যাচ বাদে খেলা ৬ ম‍্যাচে কেবল ছয় গোল দিতে পেরেছে দলটি। এর চারটিই এক ম‍্যাচে, কোপা আমেরিকায় প‍্যারাগুয়ের বিপক্ষে। জয়ও পেয়েছে কেবল ওই ম‍্যাচেই। তিন ম‍্যাচে কোনো গোলই করতে পারেনি দলের কেউ।

এদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সবশেষ তিন রাউন্ডেই হেরেছে ব্রাজিল। শুরুটা গত অক্টোবরে উরুগুয়ের বিপক্ষে ২-০ গোলে হার দিয়ে, সেটাই আপাতত নেইমারের সবশেষ ম‍্যাচ হয়ে আছে। পরের মাসে কলম্বিয়ার মাঠে হারে ২-১ গোলে। ব‍্যর্থতার ধারাবাহিকতায় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ঘরের মাঠে হারে ১-০ গোলে। থামে ৬৪ বছরের অবিশ্বাস্য এক অজেয় যাত্রা। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ঘরের মাঠে সেটাই ছিল ব্রাজিলের প্রথম পরাজয়। ২০০১ সালের পর প্রথমবার বাছাইয়ে টানা তিন ম‍্যাচ হারা দলটির পয়েন্ট এখন ৭। রয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান বাছাইপর্বের টেবিলের ছয় নম্বরে।

উল্লেখ্য, ব্রাজিলের হয়ে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১২৮ ম্যাচ খেলেছেন নেইমার। ১৮ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেকের পর দলটির হয়ে গোল করেছেন ৭৯টি। অতিক্রম করেছেন স্বদেশী কিংবদন্তি পেলের আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ড। নিজের চোট, দলের বিবর্ণ পারফরম‍্যান্স সব মিলিয়ে ক‍্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চ‍্যালেঞ্জের সামনেই হয়তো দাঁড়িয়ে নেইমার। ইউরোপপর্ব শেষ করে এখন ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলছেন সৌদি প্রো লিগের ক্লাব আল হিলালের হয়ে। তবে ব্রাজিলের জন্য নেইমার যে এখনও অপরিহার্য, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

/এমএইচআর

Exit mobile version