Site icon Jamuna Television

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘বীর মুক্তিসেনা’ বললেন জি এম কাদের

জি এম কাদের। ফাইল ছবি।

ছাত্র-ছাত্রীদের অহিংস কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের। ‘যৌক্তিক’ এই আন্দোলনে সশস্ত্র বাধাদানের ঘটনার নিন্দাও জানান তিনি। সেই সাথে কোটাবিরোধী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘বীর মুক্তিসেনা’ হিসেবে অভিহিত করছেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) এক বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান শিক্ষার্থীদের এ আখ্যা দেন। তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে সুদীর্ঘকাল থেকে বৈষম্যের মাধ্যমে সৃষ্ট বঞ্চনা, নিপীড়ন, নির্যাতন ও দারিদ্রের অভিশাপ প্রচলিত ছিল। বৈষম্যের এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে তারা বারবার সংগ্রাম করেছে, অনেকে আত্মদান করেছে এবং বারবার বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু তাদের সেই বিজয় প্রতিনিয়ত ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, বৃটিশ আমলে উপনিবেশিক শাসকরা দেশে সুবিধাভোগী জমিদার শ্রেণি ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী দ্বারা বাঙালি জাতিকে শোষন ও লুন্ঠন করেছে। পরবর্তীতে বাঙালি জাতি পাকিস্তান সৃষ্টির মাধ্যমে এই বৈমষ্য থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানিরাও সে বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়। বাঙালি জাতি আবার পাকিস্তানি শাসকদের দ্বারা সৃষ্ট বৈষম্য ও এর মাধ্যমে শোষন, বঞ্চনা, অন্যায়, অবিচার ও দারিদ্রের শিকার হতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে স্বাধিকার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে এই বৈষম্য থেকে মুক্ত হয়েছিল বাঙালি জাতি। কিন্তু সেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জন এখন আবার তারা হারাতে বসেছেন।

বিরোধী দলীয় এ নেতা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দেশে আবার বিভাজন সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই বিভাজনের মাধ্যমে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠি তৈরি করা হচ্ছে। কোটা পদ্ধতি সেই প্রক্রিয়ার একটি অংশ মাত্র। বর্তমান শাসক শ্রেণি, সরকারসৃষ্ট এই সুবিধাভোগী গোষ্ঠির মাধ্যমে দেশের জনগণকে শাসন-শোষন করে চলেছেন। সামনের দিনগুলোতেও এ উদ্দেশ্য আরও ব্যাপকভাবে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। কোমলমতি তরুণ সমাজ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সেই কারণে আমি তাদের বৈষম্য মুক্তির এ সংগ্রামের বীরযোদ্ধা বা বীর মুক্তিসেনা বলে মনে করছি।

জি এম কাদের আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ব্যবহার বা অপব্যবহার করে তাদের যেভাবে কলঙ্কিত করা হচ্ছে, তাতে করে আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে কোনও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করতে পারেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনের দাবিসমূহ নীতিগতভাবে মেনে নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। সে লক্ষ্যে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা যেতে পারে এবং সে বিষয়গুলো আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো যেতে পারে। অন্যথায়, দেশ ও আগামী প্রজন্ম একটি সংঘাতময় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছি। মনে রাখতে হবে, অযৌক্তিক জেদ কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনে না।

/আরআইএম

Exit mobile version