Site icon Jamuna Television

ভাবছেন, আন্দোলনটা চাকরির জন্য? বোকার স্বর্গে আছেন: ফারুকী

চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ফের মুখ খুলেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুর ১২টা ৪৪মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেয়া পোস্টে এই ইস্যুতে কথা বলেন তিনি।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেন, আপনারা যারা ভাবছেন, আন্দোলনটা স্রেফ একটা চাকরির জন্য, তারা বোকার স্বর্গে আছেন। আপনারা এর (আন্দোলনের) সবগুলা স্লোগান খেয়াল করেন। দেখবেন, এই আন্দোলন নাগরিকের সমমর্যাদার জন্য। এই আন্দোলন নিজের দেশে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে না বাঁচার জন্য। রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন, তাদেরকে এই আন্দোলন মনে করিয়ে দেয়, দেশের মালিক তারা না। আসল মালিক জনগণ। সেই জনগণকে রাষ্ট্র যে পাত্তা দেয় না, এই আন্দোলন সেটার বিরুদ্ধেও একটা বার্তা। রাষ্ট্র জনগণকে কেনো পাত্তা দেয় না, এই আন্দোলনকারীরা সেটাও বোঝে। যে কারণে ভোটের বিষয়টাও স্লোগান আকারে শুনেছি। আমি এটাকে এইভাবেই পাঠ করছি।

তিনি আরও বলেছেন, ‘পাবলিক সারভেন্ট শব্দটা বেশ ভালো। নির্বাচিত (আশ্চর্যবোধক চিহ্ন) প্রতিনিধি বা যেকোনো সরকারি বেতনভুক্ত ব্যক্তিকে এই শব্দেই ডাকা উচিত সবসময়। এই আন্দোলন সেই পাবলিক সারভেন্টদের মনে করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে, আপনি আমার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য।

অল পাওয়ার টু দ্য পিপল।
অল পাওয়ার টু দ্য ইয়ুথ।
প্রেয়ারস ফর মাই ফেলো সিটিজেনস।
শহীদের রক্ত কখনো বিফলে যায় না।’

এই নির্মাতা তার মন্তব্যের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ওই পোস্টে। যেটিকে তিনি ফুটনোট হিসেবে বলেছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত কৈফিয়ত! এই যে এত লম্বা লেখাটা লিখলাম, এটা আসলে আমি লিখিনি। আমি মুখে বলেছি, একজন অনুলিখন করেছে। যারা আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানেন, তারা জানেন, আমি শারীরিকভাবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ না! ফলে আমার সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সীমিত। কোটা আন্দোলন নিয়ে আমি কিছুদিন আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়ে সরিয়ে ফেলেছি। কারণ, একটা স্ট্যাটাস দিলে আমার মাথার মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়! পরবর্তীতে আরেকটা কথা লিখতে ইচ্ছা হয়। লিখতে থাকলে যত বেশি অ্যাংগেজড হই, সেটা আমার শারীরিক অবস্থার জন্য ভালো না। আমার শরীর সুস্থ করার জন্য যে লড়াইটা সেটা এক দীর্ঘ লড়াই। সেই লড়াইটা করার অনুমতি নিশ্চয়ই পেতে পারি?

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, আমার স্ট্যাটাসটা সরিয়ে ফেলার পর থেকে আজকে পর্যন্ত বিভিন্ন অনলাইন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকে লিখেছেন, আমি দালাল হয়ে গেছি এই কারণে চুপ হয়ে আছি। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার বিপদ হচ্ছে আপনাকে প্রতিদিন প্রমাণ করতে হবে আপনি কে! আজকে রাষ্ট্র যে অবস্থায় এসেছে এ অবস্থায় আসার শুরু যখন হয়েছিল তখন থেকে তারা যদি আমার ফেসবুকের লেখাগুলোএকটু গবেষণা করে দেখতো, তাহলে বুঝতে পারত আমি কে, আমি কী বলেছি। এবং কি বলার কারণে আমি বারবার বিপদে পড়ি! কোনো গবেষণা নাই, জাস্ট ঢালাওভাবে দালাল বলে দাও। আজকে যে বাইনারি চলছে, হয় তুমি আমার পক্ষে, না হয় তুমি আমার বিপক্ষে। এই বাইনারির বিপক্ষে আমি ২০১৪ সালে একটা লেখা লিখেছিলাম ”কিন্তু এবং যদির খোঁজে” বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছাপা হয়েছিল। মনে রাখতে হবে ওই সময় ছিল শাহবাগের সময়। ২০১৩ তে যখন শাহবাগে আন্দোলন শুরু হলো তখন, বাইনারি এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যে বলতে শুরু হলো ”কিন্তু এবং যদি” যে বলবে সেই রাজাকার। সেই ছাগু। সেই ছাগু ট্যাগটাকে আমি গলার মালা হিসেবে নিয়ে আমি লিখেছিলাম “কিন্তু এবং যদির খোঁজে”। কিছুদিন আগেও আমি বলেছি, স্বাধীনতাকে প্রশ্ন করতে পারাটাই স্বাধীনতা!’

/এমএন

Exit mobile version