Site icon Jamuna Television

‘চাকরি দিতে না পারলে টাকা ফেরত দিবো’

হোসাইন শাহীদ, ময়মনসিংহ :

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ দেয়ার আশ্বাস দিয়ে বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন তিনি। আবার কোনো বেতন ছাড়াই মাষ্টাররোলে কাজ করাচ্ছেন বেশ কয়েকজনকে। ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে থেকে প্রশাসনের বিভিন্ন পদে নিয়মিতই করছেন রদবদল।

এসব বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ দেখালে যমুনা নিউজকে ভারপ্রাপ্ত ভিসি এ এম এম শামসুর রহমান বলেন, চাকরি দিতে না পারলে টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন তিনি।

নিজেকে রাষ্ট্রপতির ভাগিনা পরিচয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়ার চেষ্টায় আছেন তিনি। যমুনা টিভির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনিয়ম দুর্নীতিতে কোনো রাখঠাক না করেও বহাল তবিয়তে থাকায় এখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

ত্রিশালের নামাপারা গ্রামের  যুবক হারুন অর রশিদ। তার অভিযোগ কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে মাষ্টাররোলে চাকরি দেয়ার নাম করে আট লাখ টাকা নিয়েছে ভারপ্রাপ্ত ভিসি শামসুর রহমান। দুই কাঠা জমি বিক্রি করে টাকার যোগান দিয়েছেন তিনি। তার মতো টাকা দিয়েছে গ্রামের আরো কয়েক যুবক। ত্রিশালের ওমর ফারুখ আখন্দ জানান, চাকরি না পেয়ে টাকা ফেরত চেয়েছেন তিনি। তবে এখনো ফেরত পাননি।

গত দশ আগষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ায় অধ্যাপক ড. মোহিত উল আলম ভিসির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। এর পর ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব নেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার এ এম এম শামসুর রহমান। শিক্ষকদের অভিযোগ ট্রেজারার শামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত  ভিসি হয়ে বেআইনিভাবে প্রশাসনে ব্যাপক রদবলদ করেছেন। ঘুষ নিয়ে চাকরি দেয়ার কাজে শিক্ষকদের জড়ানোর চেষ্টাও করছেন তিনি।

নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান মাষ্টাররোলে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়ার বিষয়ে তার সহযোগীতা চান শামসুর রহমান। তিনি তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।

এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের সময় ঘুষের টাকা লেনদেনের কথোপকথনের একটি রেকর্ড আসে যমুনা নিউজের হাতে। বিষয়টি সরাসরি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের নজরে আনা হয়। কথোপকথন রেকর্ডের সত্যতা স্বীকার করেন তিনি। বলেন, যদি কেউ দাবি করে তাহলে টাকা দিয়ে দেয়া হবে। চাকরি যখন দিতে পারলাম না, নে টাকা ফেরত নিয়ে যা কৃষিকাজ বা একটা কিছু করে খা।

মাষ্টাররোলে চাকরির আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন বিনা বেতনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করাচ্ছেন এমন অভিযোগও স্বীকার করেন তিনি। বলেন, এটা কোনো বিষয় না, সব বিশ্ববিদ্যালয়েই নিয়োগ বাণিজ্য হয়। বলছি চাকরি হইলে বেতন পাবি, না হইলি পাবি না। এখন কাজ করতে থাক আমি পূর্ণাঙ্গ  ভিসি হলে নিয়োগ দিয়ে দিবো।

ভারপ্রাপ্ত এই উপাচার্যের দাবি রাষ্ট্রপতি তার মামা হন। মামার ইচ্ছায় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অচিরেই নিয়োগ পাচ্ছেন তিনি।

রাখঢাক ছাড়াই কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম দুর্নীতির পরও কোনো প্রতিকার না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

যমুনা অনলাইন: এইচএস/টিএফ

Exit mobile version