Site icon Jamuna Television

হামাসের প্রধান হানিয়াকে গুপ্তহত্যার পর মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে?

ইরান সফরকালে গুপ্তহত্যার শিকার হলেন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া। তার মৃত্যু ঘিরে ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। কীভাবে ইরানের রাজধানীতে সফররত অবস্থায় তাকে হত্যা করা হলো? কিংবা ইরানের সাথে বৈরিতা থাকা অবস্থায় কীভাবে তাদের দেশে এই মিশন তারা পরিচালনা করলো?

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লর্ড পিটার রিকেটস বলেছেন, হানিয়েহের হত্যাকাণ্ড “ইসরায়েলের নিজেদের মানচিত্রের বাহিরে পৌঁছানোর ক্ষমতার একটি অত্যন্ত শক্তিশালী প্রদর্শন।”

তবে এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন মুখ খুলেনি ইসরায়েল। যদিও আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বেশ কয়েকবার বলেছেন যে তার দেশ হামাসের নেতাদের নির্মূল করতে চায়। তবে করতে চায় এবং গোপনে করে ফেলার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

ইতোমধ্যে, কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তেহরানে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের “কঠোর ভাষায়” নিন্দা জানায়।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ক্রমাগত লক্ষ্যবস্তু করার বেপরোয়া ইসরায়েলি আচরণ মধ্যপ্রাচ্যের পুরো অঞ্চলকে বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে যাবে এবং শান্তির সম্ভাবনাকে ক্ষুণ্ন করবে।

এদিকে, হানিয়ার মৃত্যুতে চুপ থাকবে না ইরান, সময়মতো মোক্ষম জবাব দেবে তেহরান বলে কঠোর মন্তব্য করেছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক সদস্য।

তবে হামাস প্রধানের হত্যাকাণ্ডের পরপরই জরুরি বৈঠক করেছে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সিনিয়র কমান্ডাররা। যাতে অংশ নেন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যরা। গুপ্তহত্যার বিষয়ে বৈঠক করেন তারা। যদিও, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কিছু জানায়নি আইআরজিসি। তবে, এ ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানায় বাহিনীটি।

এক্সপেডিয়েন্সি কাউন্সিলের সদস্য এবং প্রাক্তন আইআরজিসি কমান্ডার-ইন-চিফ মোহসেন রেজাই বলেছেন, ইসরায়েলকে হানিয়ার হত্যার জন্য ‘চরম মূল্য দিতে হবে’।

মোহসেন রেজাই আরও বলেছেন, ‘তারা (ইসরায়েল) কতটা মূর্খ যে হলে মনে করে যে এই ধরনের ঘৃণ্য শক্তি প্রদর্শন ফিলিস্তিনের মনে ভয় ধরাবে, কখনও-ই নয়, বরং ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে।

ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকারীদের ছাড় দিবে না হামাস- এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংগঠনটির সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক।
হানিয়া’র হত্যাকাণ্ডকে কাপুরুষোচিত আখ্যা দিলেন তিনি। হামাস নেতাকে হত্যা করলেও, লক্ষ্য পূরণ হবেনা ইসরায়েলের বলে মন্তব্য করেন সংগঠনটির অপর শীর্ষ নেতা সামি আবু জুহরি।

জুহরি বলেন, জেরুজালেমকে মুক্ত করতে যুদ্ধ চালিয়ে যাবে হামাস। সে লক্ষ্যে, যে কোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত যোদ্ধারা। হত্যাকাণ্ডের পর দেয়া বিবৃতিতে, ইসমাইল হানিয়াকে শহীদ আখ্যা দেয় হামাস।

হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। এক বিবৃতিতে, গুপ্তহত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরস্ক। অভিযোগ, শান্তি চায় না ইসরায়েল; এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই তা আবারও প্রমাণিত।

এদিকে, হানিয়ার হত্যাকে রাজনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়েছে রাশিয়া। এটি মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতা আরও বাড়াবে বলে শঙ্কা মস্কোর।

সব মিলিয়ে হানিয়ার হত্যাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি। এমন অবস্থায়, ফিলিস্তিনের গাজাবাসীদের ভবিষ্যৎ কি হবে কিংবা গোটা মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে, সময়ই তা বলে দিবে।

/এআই

Exit mobile version