Site icon Jamuna Television

পশ্চিমবঙ্গে মেডিকেল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও হত্যা: ‘রাত দখলের আন্দোলনে’ নারীরা

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার মাল্টি সুপার স্পেশালিটি সরকারি হাসপাতাল আরজিকরের মেডিকেল শিক্ষার্থী মৌমিতা দেবনাথের খুন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারত। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে রাজ্যজুড়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে নেমেছে বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস।

বুধবার (১৪ আগস্ট) রাতে ‘রাত দখল’ কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্যের মহিলারা। জাস্টিস ফর আরজিকর এই স্লোগানে দেশটির স্বাধীনতা দিবসের আগের রাতে ‘রাত দখল’ করলেন নারীরা।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ আন্দোলন সংগঠিত হয়। স্বাধীনতা দিবসের রাতে অভিনব এমন প্রতিবাদে নামেন পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, পাঞ্জাব গুজরাটসহ অন্যান্য রাজ্যের মহিলারা। নারীদের সাথে রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিলে রাত জাগেন সাধারণ মানুষও।

এদিকে, রাজ্যের নানা জায়গায় মধ্যরাতে জমায়েতের ডাক দেয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে চলে জোর প্রচার। রাতারাতি সেই বার্তা ছড়িয়ে পড়ে সারা ভারতে। ভারতীয় সময় রাত ৯টা থেকেই শুরু হয় জমায়েত। লক্ষ লক্ষ নারীদের দখলে চলে যায় তিলোত্তমা নগরীর রাতের রাজপথ। কলকাতার ধর্মতলা, বাংলা একাডেমি, রবীন্দ্রসদন চত্বর, যাদবপুর, বেহালা, উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার, নিউ টাউন, রাজারহাট, সল্টলেক, বিধান নগর অঞ্চলে অসংখ্য নারী মোমবাতি হাতে রাস্তায় নামেন। জেলায় জেলায় নারীদের অধিকার ও সুরক্ষার বার্তা নিয়ে শামিল হয় প্রতিবাদে। এ সময় নারীদের সুরক্ষার দাবি এবং মমতা সরকারের অবসানের স্লোগান তোলেন অনেকে।

এদিকে কর্মসূচিস্থলে পৌঁছানো ও রাতে বাড়ি ফিরতে ফ্রি বাস সেবা ছাড়াও সারারাত জুড়েই থাকছে ক্যাব সেবাও চালু করা হয়। কলকাতা বাস ও পেডিয়ারের পক্ষ থেকে রাতে মহিলাদের বিনামূল্যে বাস সেবা দেয়া হবে বলে জানানো হয়।

কলকাতা মেট্রো রেলের জনসংযোগ কর্মকর্তা কৌশিক মিত্র জানানা, রাতের আন্দোলনের কথা মাথায় রেখে স্পেশাল মেট্রো চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা মেট্রো।

পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক সূত্রে জানা যায়, রাতজুড়ে কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশি ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। এতে পর্যাপ্ত মহিলা পুলিশ রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়।

অপরদিকে এই আন্দোলনের পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবস পালন করবে শাসক দল তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা।

এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের লোকসভার বিরোধী দলনেতা ও জাতীয় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ইন্ডিয়া জোটের মিটিংয়ে শোক প্রস্তাব জানান তিনি। এ সময় তিনি নির্যাতিতা ছাত্রীর বিচার ও মমতা সরকারের তীব্র সমালোচনাও করেন তিনি। এদিকে, রাহুল গান্ধীর নিন্দা প্রস্তাবকে সমর্থন জানান ইন্ডিয়া গেটের সমস্ত শরীর দল। ফলে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভীষণভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

/আরএইচ

Exit mobile version