Site icon Jamuna Television

পরিচয় শনাক্তের উপায় নেই, নিহতদের ওজনে মেপে হস্তান্তর

পরিচয় শনাক্তের উপায় নেই, তাই গাজার স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের দেহাবশেষ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে ওজনে মেপে। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে ৭০ কেজি, আর অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে বয়স অনুযায়ী অনুমান করে মেপে দেয়া হচ্ছে এসব দেহাবশেষ। গেল শনিবার ফজর নামাজ পড়ার সময় ইসরায়েলি হামলায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় স্কুলটিতে আশ্রয় নেয়া বহু ফিলিস্তিনির দেহ।

বিধ্বস্ত এক ভবনে নিহতদের দেহাবশেষের খোঁজে ব্যস্ত হয়ে পরে স্বজনেরা। হাত-পা, মাথা কিংবা শরীর যেকোনো অংশই হোক না কেন, দাফনের জন্য দেহাবশেষের কিছুটা পেলেও যেন স্বান্তনা মেলে এসব স্বজনদের।

নিহতদের পরিবার জানায়, হঠাৎ বোমা হামলার শব্দ পেয়ে ছুটে আসি। এসে দেখি আগুন ধরে গেছে পুরো ভবনে। অনেক স্থান ধ্বসে পড়েছে। ভেতরে আমার ভাই ও স্ত্রী-সন্তানকে ছিন্ন ভিন্ন অবস্থায় পাই। ভাতিজার ছিন্ন হয়ে যাওয়া মুখটা এখনও পাইনি। সেটাই খুঁজছি।

চারদিন আগে এই স্কুলে, ইসায়েলি বিমান হামলা হয়। যাতে প্রাণ যায়, শতাধিক ফিলিস্তিনির। নিরাপদ মনে করে ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু মানুষ। দু’হাজার পাউন্ড ওজনের বোমার হামলার মাত্রা, এতটাই ভয়াবহ ছিলো যে- ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে বেশিরভাগ মরদেহ। তাই বাধ্য হয়ে, সব দেহাবশেষ একসাথে মিলিয়ে পরে ওজন করে মেপে দেয়া হচ্ছে স্বজনদের।

ছেলে হারানো এক মায়ের আর্তনাদ, আমার ৬ বছরের ছেলে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু অনেক খুঁজেও ওকে না পেয়ে দায়িত্বরতরা আমাকে ১৮ কেজি মাংস বুঝিয়ে দিয়েছেন। জানি না, এগুলো আমার ছেলেরই দেহাবশেষ কিনা।

এক ব্যক্তি বলেন, যখন হামলা হয়, তখন আমার স্বামী ভবনটির মসজিদে নামাজ পড়ছিলো। তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। এতো ছিন্ন-ভিন্ন দেহাবশেষের মধ্যে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়, আমি জানি। আমাকে ৭০ কেজি মাংস দিয়েছে ওরা।

এমন বর্বরতায় স্বভাবতই নিন্দার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে। গাজায় অমানবিকতার শেষ সীমাও যেন ছাড়িয়ে গেছে, ইসরায়েল এমনটাই মত মানবাধিকার কর্মীদের।

/আরআইএম

Exit mobile version