Site icon Jamuna Television

চলতি বছরে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

জগতের জটিলতা এখনও তার বোঝার কথা নয়। শুধু এটুকু বোঝে যে, তার হাতে ব্যথা। ছোট্ট হাতে গেলো তিনদিন ধরে মারিয়ামের হাতে স্যালাইন সঞ্চালনের ক্যানুলা। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে শুয়ে তার মা সোনিয়া বেগম।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সোনিয়া বেগম বলেন, আমার ও বাচ্চার একই সাথে ডেঙ্গু হয়েছে। বিশেষকরে, মারিয়ামের এক বছরের মাথায় এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু হয়েছে। তবে, এবারের অবস্থা খুবই খারাপ।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এই বছর এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১০২ জন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৮১৯ জন। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রোগী কম হলেও পরিস্থিতি যাচ্ছে ভয়াবহতার দিকে।

গত মাসে সাড়ে ৬ হাজার রোগী শনাক্ত হলেও, চলতি মাসের ১০ দিনেই রোগি পৌঁছেছে ৪ হাজারের ঘরে। একজন রোগী বলেন, মাথা ব্যথা ও বমি হচ্ছে। সেই সাথে, কিছুই খেতে পারছি না।

চিকিৎসক ও গবেষক ডা. শেখ মঈনুল খোকন বলেছেন, ডেঙ্গুর যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে, মনে হচ্ছে না এই রোগ আমাদের কোনভাবেই ছাড় দিবে। ২০২৩ সালে যেমন পরিস্থিতি ছিলো, তেমন পরিস্থিতি চলতি বছর হবে না, এমন বলার কোন সুযোগ নেই।

আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার। জানুয়ারির প্রথম দিন থেকে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর প্রায় ২৫ শতাংশ ঢাকা দক্ষিণের। মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি এই এলাকায়। অস্বাভাবিক চাপ বেড়েছে ঢাকা দক্ষিণের হাসপাতালগুলোয়।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. হাসিবুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ময়লা-আবর্জনা সঠিকভাবে পরিষ্কার হচ্ছে না এবং ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ার কারণে এখানে ডেঙ্গু রোগীর পরিমাণ অনেক বেড়ে গিয়েছে।

মুগদা হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে বাড়ানো হয়েছে শয্যা সংখ্যা। ওষুধ-স্যালাইনের অভাব না হলেও সংকট রয়েছে চিকিৎসকের।

ডা. হাসিবুল ইসলাম আরও বলেন, এই হাসপাতালে অতিরিক্ত ডাক্তারের কোন পোস্টিং পায়নি। গত বছর, এই হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা ছিলো ৪০ জন, এখন সেখানে কর্মরত ২জন। সেই সাথে প্রয়োজন অতিরিক্ত নার্স। তবে, সেইভাবে অতিরিক্ত কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।

তাই, বাড়তি রোগির চাপ সামলাতে হিমশিম অবস্থা হাসপাতালগুলোর। চিকিৎসকদের মত, ডেঙ্গু কমাতে তৎপরতা বাড়াতে হবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে।

/এআই

Exit mobile version