Site icon Jamuna Television

প্রতিশোধ নেবো না বলেছি, কিন্তু নির্দিষ্ট অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে: জামায়াত আমির

সিরাজগঞ্জ করেসপনডেন্ট: 

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি কারো ওপর প্রতিশোধ নেবো না। প্রতিশোধ নেয়া মানে আইন হাতে তুলে নেয়া। আইন যেখানেই হাতে তুলে নেয়া হয়েছে সেখানেই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরাজগঞ্জ দারুল ইসলাম একাডেমি মাঠে আয়োজিত রোকন সম্মেলন ও সুধী সমাবেশের প্রথম ভাগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, প্রতিশোধ প্রতিহিংসার জন্ম দেয়, যুগ যুগ এটা চলতে থাকে। আমরা চাই এই নোংরা কাজের পরিসমাপ্তি হোক। তবে ন্যায় প্রতিষ্ঠার দাবি হচ্ছে, যিনি অপরাধ করেছেন তাকে শাস্তি পেতেই হবে এবং সেটি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে। বেআইনিভাবে নয়, রক্ষী বাহিনী যেভাবে খুন করেছে সেভাবে নয়, নব্য রক্ষীবাহিনী দিয়ে আপনি যেভাবে বাংলাদেশের মানুষকে আয়নাঘরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর রেখেছেন সেইভাবে নয়, যেভাবে বিনাবিচারে ক্রসফায়ারের নামে যেখানে সেখানে মানুষ খুন করেছেন ওইভাবে নয়, আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে। যদি সেই আইনের শাষণ বাংলাদেশে কায়েম হয় তাহলে ইনশাআল্লাহ আগামীর বাংলাদেশ আর পথ হারাবে না। 

তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ তার মুক্তির যে পথে উঠেছে, গন্তব্যে না পৌঁছা পর্যন্ত বাংলাদেশ চলতে থাকুক। কোনো অপশক্তি যদি বাংলাদেশকে এই রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে চায় তাহলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের ৩৬ কোটি হাত তাদের প্রতিহত করে দিবে ইনশাআল্লাহ। 

দলটির আমির বলেন, জাতীয় ঐক্যের বড়ই প্রয়োজন। জাতির মৌলিক ইস্যুতে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সকল দল তার নিজস্ব জায়গা থেকে রাজনীতি করবে, তার বিবেকের তাড়নায় যা বলার দরকার বলবে, বর্তমান সরকারেরও প্রয়োজনীয় সমালোচনা করবে। আবার সাথে সাথে এই সরকার যেন সংস্কারের কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে তার জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতাও দেবে। এভাবে ভারসাম্যপূর্ণ রাজনীতির মধ্যে দিয়ে সবাই এগিয়ে যাক। দল ও মত ভিন্ন থাকবে, এটিই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সবাই আমার মনের মতো পছন্দের কথা বলবে না, এটা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এজন্য সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতাও থাকতে হবে। যারা সমালোচনা করে তারাই তো আমাদের প্রকৃত বন্ধু। যারা আমার সমালোচনা করে না, আমার ভুল দেখেও নিরব থাকে তারা আমার বন্ধু হতে পারে না।

জামায়াত আমির বলেন, গত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামীর ওপর সবচেয়ে বেশি জুলুম হয়েছে। একে একে প্রমাণ নয়, ক্রমিক অনুসারে ১ থেকে ১১ শীর্ষ দায়িত্বশীল নেতাদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। ফাঁসি দেয়া হয়েছে, জেলের ভিতরে তিলে তিলে তাদেরকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। চেয়েছিল তারা প্রাণভিক্ষা চাক, কিন্তু তারা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথানত করেননি। এর পাশাপাশি অন্যায়ের প্রতিবাদ যারাই করেছেন তাদের ওপরেই নির্যাতন নেমে এসেছে। আমরা অনেক আন্দোলন করার চেষ্টা করবছি সবশেষ  ছাত্র-জনতার একটি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত এই স্বৈরশাসকের বিদায় নিতে হয়েছে। 

/এনকে

Exit mobile version